পাতা:বিবিধ কথা.djvu/১০২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আচাৰ্য্য কেশবচন্দ্র ও বাংলার নবযুগ b-> তাহাই মৰ্ম্মাস্তিক রূপে উপলব্ধি করিলাম। ইংরেজী সাহিত্য ও ইংরেজ চরিত্রের সংস্পর্শে আসিয়া আমরা সবচেয়ে বেশি করিয়া বুঝিলাম— আমাদের নৈতিক দীনতা, জাতীয় চরিত্রের শোচনীয় অবনতি, বৃহৎকে ত্যাগ করিয়া ক্ষুদ্রের প্রতি আসক্তির জন্য আত্মার জড়ত । ইংরেজী শিক্ষা রীতিমত আরম্ভ হইবারও পূৰ্ব্বে এ চেতনা বাঙালীকে অধিকার করিয়াছে, নিজেদের হীন অবস্থার জন্য লজ্জিত হইবার মত আত্মজ্ঞান তাহার হইয়াছে। পুরাতন রাষ্ট্র-ব্যবস্থার উচ্ছেদে, এবং নূতন বিদেশী শক্তির সহিত কৰ্ম্মক্ষেত্রে ঘনিষ্ঠ পরিচয়ের ফলে, বাঙালী আবার ভাবিতে আরম্ভ করিল—এই ভাবনাই তাহার সুপ্ত মনীষা জাগাইল । কারণ, বাঙালী চরিত্রবলে যতই হীন হউক, তাহার ভাবগ্রাহিতা-শক্তি অসাধারণ, যুগান্তরের ভাব-সত্যকে সে অবিলম্বে জ্ঞান-গোচর করিতে পারে। উনবিংশ শতাব্দীর প্রাক্কালেই বাঙালী বুঝিতে স্বরু করিল, যুগ-প্রয়োজন কি। রাজ রামমোহন রায় বাঙালীর হইয়া সৰ্ব্বপ্রথমে এ সম্বন্ধে সচেতন হইয়াছিলেন। ধর্মের যে অপর অর্থ আমি ইতিপূৰ্ব্বে আপনাদের নিকটে উল্লেখ করিয়াছি, সেই অর্থে রামমোহন একটা ধৰ্ম্মের আবশ্বকতা অনুভব করিয়াছিলেন । বিচারবুদ্ধির তীক্ষ অস্ত্রাঘাতে, জাতির মনোভূমি হইতে সকল অন্ধবিশ্বাস, এবং ধৰ্ম্মসাধনার ক্ষেত্র হইতে সৰ্ব্বপ্রকার তন্ত্রমন্ত্র বা অলৌকিক অনুভূতির চর্চা দূর করিয়া, তিনি একটি যুক্তিসম্মত, নীতিমূলক ধৰ্ম্ম দেশবাসীর জন্য প্রণয়ন করিতে চাহিয়াছিলেন । রামমোহনের এই উদ্যম ও তাহার অন্তর্গত অভিপ্রায় আজিও কেহ বুঝিতে সক্ষম বা সম্মত হয় নাই । রামমোহন যে একেশ্বরবাদের পক্ষপাতী ছিলেন, পারলৌকিক কল্যাণচিস্তাই তাহার মুখ্য কারণ নয় ; সাধু-সন্ত বা ভক্তভাগবতগণ যে শ্রেণীর ধাৰ্ম্মিক, রামমোহন নিজে সেরূপ