পাতা:বিবিধ কথা.djvu/১০৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আচাৰ্য্য কেশবচন্দ্র ও বাংলার নবযুগ あ○ মধ্যে বাঙালী-প্রতিভার আর এক দিক নবযুগের সমস্তায় সাড়া দিয়াছিল। কেশব যুক্তিবাদী নহেন, ভক্তিবাদী –কেশব যে শক্তিবলে যুগ-সঙ্কট উত্তীর্ণ হইতে চাহিলেন, সে শক্তি আত্মিক বিশ্বাসের শক্তি, তাই কেশব রামমোহনের মত নীতিবাদী নহেন—নীতিধৰ্ম্মী ; তিনি ধৰ্ম্ম-প্রণেতা নহেন—ধৰ্ম্ম-প্রচারক। তথাপি কেশব ও রামমোহনের লক্ষ্য এক—জাতির নৈতিক জীবনের সংস্কার-সাধন । রামমোহন যাহা বুদ্ধির সাহায্যে করাইতে চাহিয়াছিলেন, কেশব তাহাই করাইতে চাহিয়াছিলেন ধৰ্ম্ম-বিশ্বাসের বলে । রামমোহন খ্ৰীষ্টান ধৰ্ম্মনীতির শ্রেষ্ঠতা স্বীকার করিলেও, এবং সেমীয় একেশ্বরবাদের পক্ষপাতী হইলেও, তাহার ব্রাহ্মণ্য আভিজাত্য-সংস্কার ত্যাগ করিতে পারেন নাই—বেদান্ত উপনিষদের দোহাই না দিয়া পারেন নাই। এইখানেই তাহার ‘ভাবের ঘরে চুরি ছিল ; তিনি ভিতরে যাহা বুঝিয়াছিলেন, বাহিরে তাহ খোলাখুলি স্বীকার করিতে রাজি ছিলেন না। এই আভিজাত্যাভিমানের বশেই—নিজধর্মের পরিবর্তে তিনি যে পরধৰ্ম্মের প্রতি আকৃষ্ট হইয়াছিলেন, তাহার প্রভাব স্বীকার না করিয়া, তিনি অতি প্রাচীন শাস্ত্র হইতে স্বপক্ষে প্রমাণ সংগ্ৰহ করিয়াছিলেন । কেশব এই আবরণটি উড়াইয়া দিলেন, নিজ ধৰ্ম্মবিশ্বাস অকপটে স্বীকার করিলেন । কেশব বিদ্রোহী নব্যবঙ্গের এক অভিনব মূৰ্ত্তি। কেশবের ধৰ্ম্ম-প্রতিভা ছিল, তাহার সমস্ত হৃদয়মন ভক্তির ভাবাবেশে ঝঙ্কত হইয়া উঠিত—সে সময়ে তাহার মুখে দিব্যপ্রভা ও কণ্ঠে দিব্যভারতীর উদয় হইত। পাশ্চাত্য যুক্তিবাদ যেমন রামমোহনের প্রতিভাকে ফুরিত কবিয়াছিল, পাশ্চাত্য ধৰ্ম্মও তেমনই কেশবকে সঞ্জীবিত করিয়াছিল। এই দুই অগ্নি-পরীক্ষাই বাঙালীকে উত্তীর্ণ হইতে হইয়াছে ; কেশবের প্রতিভা থাটি বাঙালীর প্রতিভা,