পাতা:বিবিধ কথা.djvu/১০৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ぬ8 বিবিধ কথা কেশবের জয় ও পরাজয় সে যুগের বাঙালীর ইতিহাসে এক অবশুম্ভাবী ঘটনা । কেশবের প্রতিভায় তিনটি বিষয় লক্ষ্য করিবার আছে—(১) তাহার অভারতীয় ধৰ্ম্মপ্রেরণা ; (২) ব্যক্তিগত বিবেকবুদ্ধি স্বীকার করিলেও কাৰ্য্যত তিনি ভক্তিযোগী মিষ্টিক ; (৩) কঠিন মত-নিষ্ঠা অপেক্ষা উদার ভাবগ্রাহিত । এই তিনটি লক্ষণে আমরা তাহার সাধন-জীবনের যুগোপযোগিতা বুঝিবার চেষ্টা করিব । কেশবের ধৰ্ম্মজীবনে আমরা পর-ধৰ্ম্মের প্রেরণা দেখিতে পাই । ইহুদীয় ধৰ্ম্মপ্রবক্তাগণ—ব্যাপটিস্ট জন (John the Baptist), সেণ্ট পল, ও যীশু—যে একজন ঈশ্বরপিপাস্ব হিন্দুসস্তানের ধৰ্ম্মগুরু হইলেন, কেশবের ধৰ্ম্মজীবনে ইহা কি কেবল একটা দৈব ঘটনা ? ইহার মূলে কি বাঙালী চরিত্রের বৈশিষ্ট্য এবং যুগপ্রভাব ও যুগ-সমস্যার একটা ইঙ্গিত ছিল না ? ইংরেজী সাহিত্য, দর্শন ও ইতিহাসের সহিত ঘনিষ্ঠ পরিচয়ের প্রভাব ইহার মূলে ছিল, সন্দেহ নাই—কিন্তু বাঙালীর ভাব-প্রকৃতি ইহার জন্য সমধিক দায়ী । সে যুগের ধৰ্ম্মহীন নীতিহীন সমাজের পরিণাম-চিন্তা কেশবকে যে ভাবে ব্যাকুল করিয়াছিল, তেমন আর কোনও ভাবুক বাঙালীকে করে নাই । অতিশয় স্পর্শকাতর চিত্ত ও অতিশয় কল্পনা-প্রবণ হৃদয়ে যদি আধ্যাত্মিক সঙ্কট উপস্থিত হয়, যদি তাহার সঙ্গে আন্তরিকতা, আত্মপ্রত্যয় ও চরিত্রবল থাকে, তবে সে যুগের পক্ষে যেরূপ ধৰ্ম্মপ্রেরণ স্বাভাবিক, কেশবচন্দ্রের মধ্যে তাহারই বিকাশ হইয়াছিল। যে খ্ৰীষ্টীয় ধৰ্ম্মনীতির প্রতি রামমোহনের শ্রদ্ধার কথা পূর্বে উল্লেখ করিয়াছি, কেশবচন্দ্রকেও সেই ধৰ্ম্মনীতি বিশেষভাবে আকৃষ্ট করিয়াছিল। ইহা হইতে সে যুগের বাঙালীর প্রতিভা কোন প্রধান সমস্তার সমাধান-চিন্তায়