পাতা:বিবিধ কথা.djvu/১১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আচাৰ্য্য কেশবচন্দ্র ও বাংলার নবযুগ Šዓ সৰ্ব্বোচ্চ পীঠমগুপে আসন দিয়াছিলেন ; তিনি সকল জিজ্ঞাসার উত্তর চাহিতেন ভাগবতী প্রেরণার সমীপে । বাঙালীর সন্তান, উনবিংশ শতাব্দীর সেই যুগে—মূতনতর জাতীয় সমস্যার সঙ্কটে, এবং এক অভিনব শিক্ষাদীক্ষার আবহাওয়ায়—যে নূতনতর ভক্তের বেশে আবিভূত হইতে পারে, কেশব ছিলেন তাহাই ; নদীয়ার জলমাটিতে জুডিয়ার ধৰ্ম্মবীজ যে ফুল ফুটাইতে পারে, কেশবের ধৰ্ম্মজীবন সেই ফুল। কিন্তু নূতন জ্ঞান-বিজ্ঞানের যুগে অবিমিশ্র ভক্তিকেও মিশ্ররূপ ধারণ করিতে হয় ; কেশবের জীবনে সে দ্বন্দ্ব ছিল। তিনি সেই দ্বন্দ্বকে জ্ঞানত অস্বীকার করিয়াছিলেন ; কিন্তু যিনি র্তাহার সমগ্র চরিত আলোচনা করিবেন, তিনিই দেখিতে পাইবেন, সে যুগের ধৰ্ম্মান্দোলনের পূৰ্ব্বোত্তর ধারায় ইহাই কেশব-জীবনের বিশেষত্ব। এই জন্যই সে যুগের সংস্কারপন্থীদের মধ্যে একমাত্র কেশবের প্রতিভাকেই সত্যকার ধৰ্ম্মপ্রতিভা বলা যাইতে পারে। কারণ, ধৰ্ম্ম কেবল নীতির শাসন নয় ; অথবা ঈশ্বর নামক কোনও কল্পিত সত্তাকে যুক্তিবিচারের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত করিয়া, পরে নিজের বিবেক নামক অহংকারের সহিত তাহাকে যুক্ত করিয়া আত্মপ্রসাদ লাভ করার পন্থাও নয়। ইহারই বিরুদ্ধে কেশব র্তাহার জলন্ত বিশ্বাসকে ভক্তিরসধারায় প্রবাহিত করিয়াছিলেন। কিন্তু তাহার প্রকৃতিতে জ্ঞান ও ভক্তির দ্বন্দ্ব ছিল ; না থাকিলে তাহার জীবন এমন কৰ্ম্মময় হইত না ; বুঝি বা, তিনি নব ধৰ্ম্মনিৰ্ম্মাণে আশানুরূপ সিদ্ধিলাভে বঞ্চিত হইতেন না। এই ভক্তি যেমন র্তাহাকে নিজ ধৰ্ম্মজীবনে জয়ী করিয়াছিল, তেমনই ধৰ্ম্মপ্রচারের স্ববিরোধী অধ্যবসায়ে তাহাকে ক্লাস্ত শ্রান্ত ও বিফলমনোরথ করিয়াছে। কেশব জ্ঞান, ভক্তি ও কৰ্ম্মের সমন্বয় চাহিয়াছিলেন ; প্রকৃতি জ্ঞানপ্রধান না