সে শ্মশানকে গৃহপ্রাঙ্গণে আনিয়া মৃত্যুর আলোকে জীবনকেই ভাস্বর করিয়া তোলে।
৪
শরৎচন্দ্রকে শেষ দেখি ঢাকায়, ১৩৪৩ সালে। অনেক দিন পরে দেখা—ইতিমধ্যে বাংলা সাহিত্যের স্রোতোধারায় কত আবিলতা, কত ক্ষুদ্র বৃহৎ ঘূর্ণাবর্ত্ত দেখা দিয়াছে—শরৎচন্দ্রকেও এক স্থানে স্থির হইয়া থাকিতে দেয় নাই। শরৎচন্দ্রের নূতনতর রচনা, ও নূতন নূতন ভক্ত-সম্প্রদায়ের জয়ধ্বনি তাঁহার ব্যক্তি-পরিচয় ও সাহিত্যিক প্রতিভাকে আমার চক্ষে একটু ভিন্নরূপ করিয়া তুলিয়াছে। শরৎচন্দ্রের মন ও প্রাণ তাহার প্রভাবে কতখানি প্রভাবিত হইয়াছে, তাহাও জানি না; কেবল এইমাত্র জানি যে, আমাকে তিনি ভুলিয়া যান নাই—না ভুলিবার কারণও ছিল। তাই তাঁহার আহ্বানের অপেক্ষা না রাখিয়া আমি তাঁহার সহিত সাক্ষাৎ করিতে গেলাম। তিনি তখন স্বর্গীয় চারুচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাসায় অতিথি—তাঁহাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাধি-দান ব্যাপার শেষ হইয়াছে; শরীর অসুস্থ বলিয়া একটু বিশ্রাম করিতেছেন—ঢাকা ত্যাগ করিবার তারিখ একটু পিছাইয়া গিয়াছে। কিন্তু তাঁহাকে একটু একা পাওয়া অসম্ভব, ভিড় কিছুতেই কমে না। যেদিন কলিকাতায় ফিরিবেন, ঠিক তাহার আগের দিন সন্ধ্যায় আমি তাঁহার সহিত সাক্ষাৎ করিলাম। কথাবার্ত্তার কোন অবকাশই পাইলাম না—কেবল দেখিলাম, নানা জন যাইতেছে ও আসিতেছে, সামাজিকতার দাবি মিটাইতে তিনি ক্লান্ত হইয়া পড়িয়াছেন। গলার বেদনা ও জ্বর তখনও আছে—পাশের টেবিলে নানা আকারের শিশি ও