তাহা সত্য; কারণ জীবন সম্বন্ধে প্রাণময় অভিজ্ঞতার সেই সব কাহিনী কোন কাব্যে বা সমালোচনা-গ্রন্থে আমি এমন সাক্ষাৎভাবে পাইতাম না। আমার পক্ষে সেইরূপ পাওয়ার যে প্রয়োজন আছে—তাঁহার এই বিশ্বাসকেই, আমার প্রতি তাঁহার শ্রদ্ধার নিদর্শন বলিয়া গ্রহণ করিয়াছিলাম।
৬
ইহাই তাঁহার সঙ্গে আমার শেষ আলাপ, এইখানেই তাঁহার সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত পরিচয়ের সমাপ্তি। কিন্তু তাঁহার সাহিত্যিক পরিচয়ের তো শেষ নাই। সেই পরিচয়ের পথ কতকটা সুগম করিয়াছে, তাঁহার সহিত সাক্ষাৎ-সংস্পর্শের এই কয়েকটি আলোক-বর্ত্তি; আমি আজ তাহারই বিবরণ লিপিবদ্ধ করিলাম। এ বিবরণ হয়তো শরৎ-সাহিত্যের ভবিষ্যৎ সমালোচকের কিঞ্চিৎ কাজে লাগিবে, আমারও কিছু লাগিয়াছে, তাহাতে সন্দেহ নাই। আমি শরৎ-সাহিত্যকে যে দৃষ্টিতে দেখিয়াছি, তাহাও যেমন আমারই দৃষ্টি, তেমনই শরৎচন্দ্রকে যে দৃষ্টিতে দেখিয়াছি, তাহাও আমারই—আমার দাবি কোনও অভ্রান্ত সত্যদৃষ্টির দাবি নয়। কোনও মানুষকে কেহ কখনও পূর্ণ-দেখা দেখে নাই, অন্তরঙ্গ আত্মীয়কেও নয়। কেবলমাত্র শ্রেষ্ঠ কবিশক্তির দিব্য আবেশে, এক পরম ক্ষণে, মানুষ আপনাকে দেখার মতই পরকে দেখে। সাহিত্যে সে দৃষ্টিও আজ লুপ্ত হইয়াছে; আজিকার দর্শনশাস্ত্রও আর সেই সমগ্রদৃষ্টিতে বিশ্বাস করে না। অতএব আমার দৃষ্টির খণ্ডতা যেমন অবশ্যম্ভাবী, তেমনই তাহা লজ্জার বিষয় নহে। কিন্তু সাহিত্য-বিচারে যেমন হউক একটা