পাতা:বিবিধ কথা.djvu/১৮৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
রবি-প্রদক্ষিণ
১৭১

হইতে আর এক যুগে এমন সেতু-যোজনা পূর্ব্বে কখনও ঘটিয়াছে কিনা জানি না। কেবল আয়ুষ্কালের পরিমাণই এ আনন্দের কারণ নয়, —কেবল জীবিত থাকাই নয়, স্থবিরতার গৌরবই নয়—রবীন্দ্রনাথ আজিও জরার আক্রমণ প্রতিরোধ করিয়া অফুরন্ত জীবনীশক্তির পরিচয় দিতেছেন; মৃত্যুর ছায়া বার বার তাঁহাকে স্পর্শ করিলেও সে প্রাণকে অভিভূত করিতে পারে নাই—তাঁহার কবিচিত্তে প্রবেশাধিকার পায় নাই—ইহাই সবচেয়ে বড় সৌভাগ্য। আশায়, আশঙ্কায়, আনন্দে আমরা আজিও কামনা করিতেছি—রবীন্দ্রনাথকে এখনও অন্তত কিছুকাল বিধাতার বরে ধরিয়া রাখিতে পারিব। এ বৎসর আমাদের আনন্দ কৃতজ্ঞতার অশ্রুজলে ধৌত হইয়া আরও উজ্জ্বল হইয়াছে; আমরা প্রায় সর্ব্বস্বান্ত হইতেছিলাম, দুইটি বৃহৎ জ্যেতিষ্ক আমাদের ভাগ্যাকাশ হইতে প্রায় একসঙ্গে খসিয়া গিয়াছে—জ্যোতিষ্কমণ্ডলমধ্যবর্তী রবিকেও প্রায় হারাইতে বসিয়াছিলাম। বিধাতা এবার আমাদিগকে বড় কৃপা করিয়াছেন। তাই এ বৎসর পঁচিশে বৈশাখ শুধুই আনন্দ নয়—ভগবানের উদ্দেশে নতজানু হইয়া কৃতজ্ঞতা নিবেদনের দিন; সেই করুণাময়ের নিকটে আজ আমরা সকল দেশবাসীর সমবেত প্রার্থনা জানাইতেছি, রবীন্দ্রনাথ যেন শতায়ুঃ হইয়া এ জাতির এই তমসাচ্ছন্ন জীবনে স্থির দীপশিখার মত নৈরাশ্য নিবারণ করেন।

 আজ এই উপলক্ষ্যে আমি অতিশয় সংক্ষেপে রবীন্দ্রনাথের অলৌকিক প্রতিভার বিকাশ ও পরিণতি সম্বন্ধে কিঞ্চিৎ আলোচনা করিব। এ আলোচনা অতিশয় অসম্পূর্ণ হইবে; বিস্তৃত পরিচয়ের প্রয়োজনও নাই, অবকাশও নাই। তথাপি কবিকীর্তির কথঞ্চিৎ আলোচনা আজিকার দিনে বাঞ্ছনীয় মনে করি। রবীন্দ্রনাথের