পাতা:বিবিধ কথা.djvu/২০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

3ఫె: বিবিধ কথা মাছুষ নয়—যে বস্তু কবি-বিধাতার সর্বশ্রেষ্ঠ কীৰ্ত্তি, সেই হৃদয় নামক যন্ত্রটি তাহার মধ্যে বিকল হইয়া আছে। যাহারা লোক-লোকাস্তরের স্বপ্ন দেখে, যাহারা মৃত্যুর পরেও অবিচ্ছেদে জীবনযাপন করার কথায় বিশ্বাস করে, তাহারা শিশুর মত রূপকথার ভক্ত। এই দুই শ্রেণীর মধ্যে তফাৎ এই যে, এক দল তত্ত্বজ্ঞানের অভিমানে হৃদয়বৃত্তি নিরোধ করে ; অপর দল হৃদয়াবেগের মোহে নির্বিচারে মিথ্যার শরণাপন্ন হয় । মৃত্যুর পরে আর কিছুই নাই—এ কথা যতই সত্য বলিয়া মনে হউক—স্বীকার করিতে সকলেই ভয় পায়। মৃত্যুর সম্বন্ধে ভাবিতে গেলেই মনের মধ্যে একটা অন্ধকার শূন্ত মাত্র অনুভব করি—অথচ, শূন্ত বা নাস্তিত্বের কল্পনাও আমাদের সংস্কার-বিরোধী ; তাই মন সেই শূন্ত বা নাস্তি-চেতনাকে নানা কৌশলে আবৃত করিবার চেষ্টা করে— সেই অন্ধকার গহবরকে কোন কিছু দিয়া ভরাইয়া রাখিতে চায়। মাহুষ মৃত্যুশোকে সাম্বন চায়—তাহার অর্থ, মৃত্যুকে সে মানিতে চায় না ; অস্তিত্বের ঐকাস্তিক বিলোপ তাহার জীব-সংস্কারের পক্ষে বিষবৎ মারাত্মক, তাই আত্ম-প্রবঞ্চনার দ্বারা সে আত্মরক্ষা করিয়া থাকে। ভাল করিয়া ভাবিয়া দেখিলে, স্পষ্ট প্রতীয়মান হইবে যে, মাহুষ সাধারণ মৃত্যু-ঘটনায় বিশেষ বিচলিত হয় না ; যে মরিয়া গেল, জীবন-ব্যাপারে তাহার সঙ্গে আর কোনও সম্পর্ক থাকে না বলিয়া তাহাকে সে আর গণনার মধ্যেই আনে না। শোকের আক্ষেপ মনের একটা সাময়িক পীড়া মাত্র ; যে বঁাচিয়া আছে সে প্রাণবস্ত—প্রাণহীনের সঙ্গে প্রাণীর যে সম্পর্কহীনতা, তাহ ধৰ্ম্মের মত দুল্ল জ্য—যে মৃত সে আর আমাদের কেহ নয়, এই সংস্কার যেন প্রাণের মৰ্ম্মমূলে জড়িত হইয়া আছে। অতএব শোক মিথ্যা, সান স্বসাধ্য।