পাতা:বিবিধ কথা.djvu/২৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাঙালীর অদৃষ্ট ૨૨8 aristocracy-র দলকে মোহগ্ৰস্ত করিয়াছে ; জাতির বাকি অংশ যে কি, সে পরিচয়ের প্রয়োজনও নাই—তাহারা কৃতাঞ্জলিপুটে সমাজের এই শীর্ষস্থানীয়দের মুখপানে চাহিয়াই কৃতার্থ। এক দিকে দাস-মনোভাব অস্থিমজ্জাগত, অপর দিকে কৌলীন্য-লালায়িত ভূস্বামী ও শাস্ত্রমর্য্যাদালোলুপ বর্ণ-ব্রাহ্মণ জাতির যে কুলজী প্রস্তুত করিল, তাহাতে বাঙালীর ইতিহাস মুখ্যত উপনিবিষ্ট আর্য্যের ইতিহাস বলিয়াই একটা সংস্কার দাড়াইয়া গেল। এই সংস্কার তাহার আত্মরক্ষার সহায়তা করিলেও, তাহার বিশিষ্ট প্রতিভা ও প্রাণ-ধৰ্ম্মের সঙ্কোচ সাধন করিয়াছে । ব্রাহ্মণ্যসংস্কার, সংস্কৃত সাহিত্য, ও আর্য্যের ইতিহাস বাঙালীকে যেমন এক দিকে রক্ষা করিয়াছে, তেমনই অন্য দিকে তাহাকে হতচেতন করিয়াছে। তথাপি তাহার রক্তের ধৰ্ম্ম সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র, সে স্বাতন্ত্র্য আজিও একেবারে লুপ্ত হয় নাই ; তাই প্রায় দুই শত বৎসর পূৰ্ব্বে বাহির হইতে আবার যে প্রচণ্ড প্রভাবের স্বত্রপাত হইল—তাহাতে তাহার মনের দুয়ার-জানালা আবার যখন খুলিয়া গেল, তখন তাহার সেই বহুকাল-মুক্ত অসাড় প্রাণ-ধৰ্ম্ম আবার এক নবজাগরণে জাগিয়া উঠিল । বাঙালী ভাবপ্রবণ, স্বচ্ছন্দ-সুখাভিলাষী, কল্পনাবিলাসী। তর্কশাস্ত্রে তাহার অধিকার যতই অসামান্য হউক, জীবনে সে কোনও উৎকৃষ্ট যুক্তি বা কঠিন নীতির পক্ষপাতী নয়। অতিশয় বিরোধী ভাব ও ভাবনাকে একই কালে প্রশ্রয় দিতে সে কুষ্ঠিত নয়—এ বিষয়ে এমন চরিত্রহীন জাতি বোধ হয় আর কুত্ৰাপি নাই। সমাজ ও ধৰ্ম্মে ব্রাহ্মণ্য শাসন স্বীকার করিয়াও সে গোপনে ভাব-তান্ত্রিক, স্বৈরাচার বা নানা অশাস্ত্রীয় গুহাসাধনা হইতে কখনও নিবৃত্ত হয় নাই । তাহার স্বভাবে জ্ঞানের সহিত বিশ্বাসের কোনও সম্পর্ক নাই—ভাবই