পাতা:বিবিধ কথা.djvu/৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অতি-আধুনিক সমালোচক ও বঙ্কিমচন্দ্র 83 তাহা এতই গভীর যে, যুগ হইতে যুগে সে সম্বন্ধে নূতন কথার শেষ হইবে না । কিন্তু ইহা তো যুক্তির কথা হইল না। আধুনিক রসিকের যুক্তি চায়—যুক্তি না পাইলে একটি জাধলা-পয়সাও দিবে না । তাহার সেয়ানা হইয়াছে—যত সেয়ানা লইয়া দল পাকাইয়া রাস্তার মোড়ে মোড়ে ক্যানেস্তারা বাঙ্গাইয়া সাধু সাবধান ? বলিয়া সাধুকে শাসাইতেছে । এ চীৎকারের মধ্যে কথা কহিবে কে ? শুনিবে কে ? সাহিত্যসমালোচনায় যাহারা যুক্তি-তর্কের আস্ফালন করে ও প্রতিপক্ষ খাড়া করিয়া অব্যর্থ শরসন্ধানের দাবি করে, তাহাদের অস্তুত একটুও সাহিত্য-জ্ঞান থাকা প্রয়োজন । সাহিত্যিক বিচারে যুক্তির দ্বার রসের প্রমাণ হয় না, তথাপি তর্ক যদি করিতেই হয়, তবে সাহিত্যের সমালোচনারও একটা ব্যাকরণ, অভিধান আছে—ফৌজদারী মোকদমায় প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করিবার জন্য উকিলদের যেরূপ বাকৃপটুতার প্রয়োজন হয়, সেইরূপ চোখ-বুলির কসরত দেপাইতে পারিলেই এখানেও কেল্লা ফতে করা যায় না। লেখাপড়ার ধার ধারি না ; সাহিত্যের স্বষ্টিতত্ত্ব, রস-রহস্ত, রূপ-বৈচিত্র্য বা তাহার বিকারবিবৰ্ত্তনের ঐতিহাসিক ধারা—এ সকলের কিছুরই জ্ঞান নাই ; কেবল কতকগুলি প্রাকৃত-জন-বোধিনী 'অকাট্য যুক্তির বলে সাহিত্যের চিরন্তন আদর্শ ও নীতিকে ধূলায় টানিয়া চীৎকার করিব—এ কেমন কথা ? রসের কথা তোমাদের সঙ্গে নয়, কিন্তু যুক্তিতর্কই বা কি করিব ?— বুঝিবার শক্তি, প্রবৃত্তি বা অবকাশ আছে ?—কারণ, পড়িলে ভেড়ার গৃহে ভাঙে হীরার ধার।