যে সমস্যার সমাধানে কত মহা মহা চিন্তাবীর ও কর্ম্মবীর আজও কুল পাইতেছেন না——রামমোহন নাকি তাঁহাদের বহু পূর্ব্বে তাহারই ইঙ্গিত করিয়াছিলেন, এবং এজন্য রাজনীতি-ক্ষেত্রেও তিনি এ জাতির আদি পথ-প্রদর্শক! কোনও মূল্য থাক বা না থাক—কাজে লাগুক বা নাই লাগুক, তিনি একটা যা হয় চিন্তা করিয়াছিলেন, ইহাই যদি তাঁহার রাজনৈতিক গুরু হইবার কারণ হয়, তবে এ কথা বলিলে অন্যায় হইবে না যে, রবীন্দ্রনাথ যে নূতন ছন্দে কাব্য রচনা করিয়াছেন, প্রাচীন বৈষ্ণব কবিগণের কেহ কেহ বহু পূর্ব্বেই তাহার মক্স করিয়াছিলেন, অতএব তাঁহারাই আধুনিক বাংলা কাব্য-সাধনার গুরু।
রামমোহনের আর একটি বড় কাজ—এদেশে ইংরেজী শিক্ষা প্রবর্ত্তনের উদ্যোগ ও সহায়তা। কথাটা সত্য বটে, কিন্তু এমন ভাবে ইহা ঘোষণা করা হইয়া থাকে, যেন রামমোহনই একা সমগ্র জাতির হিতাক্ষাঙ্ক্ষী ও কর্ত্তব্যপরায়ণ অভিভাবকরূপে এই কার্য্য করিয়াছিলেন —যেন তাঁহার চেষ্টা ব্যতিরেকে এদেশে ইংরেজী শিক্ষার প্রচলন হইত না। সতীদাহ নিবারণের মত যেন এ কার্য্যেও তিনি বহু বাধা ও প্রতিকূলতা অতিক্রম করিয়া আত্মহিতবিমুখ সমাজকে এই মৃত-সঞ্জীবন ঔষধ পান করাইয়াছিলেন। যাঁহারা এদেশে ইংরেজী শিক্ষা-প্রবর্ত্তনের ইতিহাস বিশেষভাবে আলোচনা করিয়াছেন তাঁহারা জানেন, এ বিষয়ে রামমোহনের কৃতিত্ব আর কাহারও তুলনায় বেশি তো নহেই, বরং কম বলিলেও অন্যায় হইবে না। রাজা রাধাকান্ত দেব, গোপীমোহন ঠাকুর প্রমুখ হিন্দু প্রধানগণ এ বিষয়ে কম উদ্যোগী ছিলেন না। লর্ড আমহার্স্ট কে একখানি পত্র লেখা ছাড়া, এ কর্ম্মে রামমোহনের কায়িক