পাতা:বিবিধ কথা.djvu/৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
রামমোহন রায়
৮১

 রামমোহনের বাণী চিরদিন আমাদের দেশের যুক্তিবাদী পণ্ডিতগণের শ্রদ্ধা আকর্ষণ করিয়াছে। অসাম্প্রদায়িক শিক্ষিত বাঙালীও রামমোহনের যুক্তিবাদের গূঢ় মহিমায় মুগ্ধ হইয়াছেন। শ্রীযুক্ত গিরিজাশঙ্কর রায় চৌধুরী মহাশয় আমাদের কালের এইরূপ একজন ব্যক্তি। রামমোহনের বাণী তিনি যেরূপ শ্রদ্ধা ও পাণ্ডিত্য সহকারে আলোচনা করিয়াছেন, রামমোহনের তথাকথিত ভক্তমণ্ডলীর মধ্যে অতি অল্প লোকেই তাহা করিয়াছেন বলিয়া আমার বিশ্বাস। তাঁহার অশেষ পাণ্ডিত্যপূর্ণ গ্রন্থ—“বিবেকানন্দ ও বাংলার ঊনবিংশ শতাব্দী” যাঁহারা পড়িয়াছেন, তাঁহারা স্বীকার করিবেন, ঐ গ্রন্থে তিনি রামমোহনের মহত্ত্বপ্রতিপাদনে কতখানি বিদ্যাবত্তা ও চিন্তাশক্তি প্রয়োগ করিয়াছেন। গ্রন্থখানির নামকরণে তিনি ভুল করিয়াছেন—বিবেকানন্দের প্রসঙ্গেও তিনি এক মুহূর্ত্তও রামমোহনকে ভুলিতে পারেন নাই। আজ আমি দেখিয়া বিস্মিত হই নাই যে, তিনিই ব্রজেন্দ্রবাবুর নবপ্রকাশিত প্রবন্ধগুলি পড়িয়া রামমোহনের জীবনচরিতের নূতন খস্‌ড়া লিখিতে সর্ব্বাগ্রে প্রবৃত্ত হইয়াছেন। রামমোহনকে যিনি সাম্প্রদায়িক কারণে শ্রদ্ধা করেন না, একটা আন্তরিক সত্যের খাতিরে শ্রদ্ধা করেন—এ কাজ তাঁহারই উপযুক্ত। রামমোহনকে বুঝিতে হইলে তাঁহার সত্যকার জীবনচরিত আলোচনা করিতে ভয় পাইলে চলিবে না, ইহা তিনি স্বীকার করিয়াছেন। এই জীবনচরিতের আলোকে রামমোহনের বাণী, বা বাণীর আলোকে জীবনচরিত—যে ভাবেই আলোচনা করি, এক্ষণে রামমোহনকে বুঝিতে হইলে তাঁহার চরিত্র বা ব্যক্তিত্বকে প্রাধান্য দিতে হইবে। গিরিজাবাবুর নিকট হইতে সেই আলোচনা আমরা এখনও প্রত্যাশা করিতেছি। রামমোহনের জীবনকাহিনী এইরূপে