পাতা:বিবিধ প্রবন্ধ (দ্বিতীয় খণ্ড) - গিরীন্দ্রকুমার সেন.pdf/১৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কলিকাতায় অৰ্দ্ধোদয় যোগ ও স্বদেশ-সেবা । ১৫৯ শিয়ালদহ ও হাওড়ার রেলের ষ্টেসনে, ট্রামের রাস্তার প্রত্যেক মোড়ে শত শত ভলণ্টিয়ার নানাভাবে যাত্ৰিগণের সাহায্য করিয়াছিলেন । মেডিকেল ভলণ্টিয়ারদের সঙ্গে নানাপ্রকার ঔষধ, ব্যাণ্ডেজ বাধিবার ফিতা ও যন্ত্রাদি ছিল। হঠাৎ কোন দুর্ঘটনা ঘটিলে যাহাতে তৎক্ষণাৎ রোগীর বা আহতের বা মূচ্ছিতের চিকিৎসা হইতে পারে, এবং তত্ত্বাবধানের বিলম্ব জনিত কোন বিভ্ৰাট না ঘটে, তাহার চমৎকার বন্দোবস্ত করা হইয়াছিল। ভদ্র সন্তানের। ডুলি ঘাড়ে লইয়া আৰ্ত্তের উদ্ধারের জন্য পথে পথে ঘুরিয়া বেড়াইতেছেন-এ দৃশ্য আমাদের দেশে নূতন, এবং প্রথম হইলেও আশা করি শেষ নহে । এই অৰ্দ্ধোদয় যোগ উপলক্ষে বঙ্গদেশের অতি অজ্ঞাত পল্লী হইতেও এরূপ নরনারীর সমাগম হইয়াছিল, যাহারা জীবনে কখনও কলিকাতা দুরের কথা, ইষ্টকবদ্ধ পথ ও ঘোড়ার গাড়াও দেখে নাই, অথচ তাহাদের তীর্থযাত্রার কাণ্ডারী এক জন মাত্র পুরুষ ‘সেথো” । সেই সকল “সেথো” পল্লীগ্রামের রমণী-সমাজে যে পরিমাণেই আত্মমহিমা বিকীর্ণ করুক, কলিকাতার পথ ঘাটের সন্ধান তাহারা রাখে না ; হঠাৎ কোন বিপদ উপস্থিত হইলে সঙ্গী সঙ্গিনীদের রক্ষা করা দুরের কথা, আত্মরক্ষায় পৰ্য্যন্ত তাহদের শক্তি নাই | এইরূপ সোথের সঙ্গে এবার অসংখ্য যাত্ৰী কলিকাতায় আসিয়াছিল ; এমন কি, এক এক জনের সঙ্গে ৫০ । ৬০টি স্ত্রী, পুরুষ ও বালক । কেবল সেথোর উপর যদি নির্ভর করিতে হইত, কিম্বা কেবল পুলিশ যদি দয়া করিয়া শান্তিরক্ষার ভার লাইতেন, তাহা হইলে কত লোকের যে কি ভয়ানক দুৰ্গতি হাইতি, তাহ বলিয়া শেষ করা যায় না ; কিন্তু সুখের বিষয় এখন দেশের চিন্তাস্ত্ৰোত ভিন্ন পথে প্রবাহিত হইতেছে, দেশের শিক্ষিত যুবকগণ আত্মত্যাগের উদার ও মহানব্রত গ্ৰহণ করিয়াছেন ; ব্যক্তিগত সুখ, শান্তি, আরাম কল্যাণের ক্ষুদ্র গণ্ডী অতিক্ৰম করিয়া, ভবিষ্যতের