দ্বিতীয় ভাগ । సి(t স্বদেশ হইতে বাহির না হইলেই যে মানুষের কুপমণ্ড কত জন্মে আর বাহির হইলেই যে ঐ দোষ একেবারে ঘুচিয়া যায়, একথাও প্রকৃত কথা নহে। কত ইংরাজের সহিত আলাপে দেখা যায়, অনেকানেক দেশ পরিভ্রমণ করিয়াও তাহার সেই সেই দেশের প্রকৃতি কিছুই বুঝিতে পারেন নাই । আর অনেকেই লক্ষ্য করিয়া থাকিবেন ইংরাজ রাজকৰ্ম্মচারীদের মধ্যে কেহ পনর, কেহ বিশ, কেহ ত্রিশ বৎসর এদেশে কাটাইয়াও এদেশের অতি সাধারণ বিষয় সকলেও ঘোর মুর্থ থাকিয়া যান । ঐ সকল লোককে দেখিলে একটী রুসীয় ভদ্র সন্তানের সহিত মহাত্মা পটরের যেরূপ কথোপকথন হুইয়াছিল বলিয়া লিখিত আছে, সেই কথা মনে পড়ে । মহাত্মা পীটর স্বয়ং সাম্রাজ্যাধিকার প্রাপ্ত হইয়া অনেকশনেক ইউরোপীয় রাজ্যে গিয়াছিলেন । তিনি ফিরিয়া আসিয়া বড় বড় জমীদারদিগের সুন্তানদিগকে ইউরোপের নানা দেশে প্রেরণ করিলেন । একজনকে ইটালী যাইতে অনুজ্ঞা হইল । স্বদেশবৎসল রুসীয় সন্ত্রাস্ত লোকেরা তখন পরদেশে পদার্পণ করাও দোষ মনে করিত । যে ব্যক্তি ই লীি যাইতে আদিষ্ট হইল সে নিজ ব্যয়ে একটা সুবৃহৎ যান প্রস্তুত করিল। এবং তাহারই ভিতর রান্না
খাওয়া প্রভৃতি সকল কাজ চলে এরূপ বন্দোবস্ত করিয়া লইল । সে ঐ যান মধ্যে রহিল, ভূত্যের উহা ইটালী দেশের প্রধান নগর রোম পৰ্য্যস্ত লইয়। গেল এবং তথ হইতে ফিরাইয়া আনিল । সে ইটালী হইতে প্রত্যাবৰ্ত্ত হইয়াছে শুনিয়া সম্রাট পীটর তাহাকে ডাকিলেন এবং সে আসিলে জিজ্ঞাসা করিলেন “ইটালী দেশ কেমন দেখিলে ?” * * “আজ্ঞে দেশ দেখি নাই।”
- * “দেশ দেখ নাই কি—এই সেদিন মাত্র তথা হইতে আসিলে না ?” “আন্দ্রে তা বটে—কিন্তু দেশ দেখি নাই” * * “গেলে এলে কেমন করে ?” আঙ্কে একটা বড় গাড়ি করিয়া গিয়াছিলাম, একবারও বাহির হই নাই”— পীটর আশ্চর্য্যাম্বিত হইয়া রহিলেন ।
অনেকানেক ইউরোপীয়ের বিশেষতঃ কোন কোন ইংরাজের ঐরূপ এক একটা ষান সমভিব্যাহারেই থাকে~ উইার বন তাহার ভিতর হইতে বাহির হয়েন না। ঐ যান কাষ্ঠ বিনিৰ্ম্মিত নয়—উহ অহঙ্কার, দাম্ভিকতা, পরজাতির প্রতি ঘৃণ এবং বিদ্বেষ বিনিৰ্ম্মিত,উহচৰ্ম্মচক্ষুর অগোচর পদার্থ-ইংরাজ উহারই ভিতরে বসিয়া সকল দেশ ভ্রমণ করেন এবং ভারতবর্ষে চাকুরি করিয়া ঘরে ফিরিয়া যান। আমাদের সমাজ ওরূপ কুপম শুকতার স্বষ্টি করিতে পারে না ।