రి రి বিবিধ প্রবন্ধ লোকের উপকার হয় । বাজি পোড়াইয়া আলো জালিয়া টাকা নষ্ট করিও না। ভোজ দিয়া অনর্থক অপব্যয় এবং অপকৰ্ম্ম করিও না । যে ইংরাজের তুষ্টিসাধনার্থ ঐ সকল করিয়া থাক, তাহার নামে ইন্দার, দীর্থিক, রাস্তা, ঘাট, স্কুল, অতিথিশালা, ছাত্রবৃত্তি, মেডাল, চিকিৎসালয় প্রভৃতি যাহা কিছু পার, স্থাপন কর। এরূপ করিতে আরম্ভ করিলেই দেখিতে পাইবে যে বীরপ্রকৃতিক ইংরাজ “সত্য সত্যই” তোমার গৌরব করিবেন। এখন তোমার খরচে তোমার বাট বসিয়া ভোজ খাইয়। মনে মনে তোমাকেই অশ্রদ্ধা করেন । ঈর্ষ্যাপ্রবণতা । ইংরাজের সংস্পর্শে বঙ্গবাসীর হৃদয়ে একটী বিশেষ দোষ জন্মিতে আরম্ভ হইয়াছিল । আমার বোধ হয় সে দোষট ক্রমে ক্রমে নূ্যন হইয়া যাইতেছে । কিন্তু এখনও উহার এত অবশেষ আছে যে, তৎসম্বন্ধে দুই একটা কথা বল। নিতান্ত আবশ্যক বলিয়া বোধ হয়। ঐ দোষটার নাম ঈর্ষা প্রবণতা । বাঙ্গালী স্বজাতীয় লোকের প্রতি অতিশয় ঈর্ষ্যাম্বিত হইয়া উঠিয়াছেন । যখন ১৮৩৫ অব্দের পর মুন্সেফ সদর-আমীন প্রভূতির পদ স্থষ্ট হইল, তখন অনেক লোক শুদ্ধ স্বজাতীয় হাকিমদিগের প্রতি ঈর্ষ্যাম্বিত হইয়া বলিত, আমরা কালা হাকিমদিগের নিকটে বিচার প্রার্থনা করি ন—ইংরাজ হাকিমের মামীদিগের মোকদ্দমার বিচার করিলেই আমরা অধিক সন্তুষ্ট হই। কোন কোন ইংরাজ ঐ কথার স্বত্র পাইয়া এককে এক শত করিয়৷ বাড়াইয়াছিলেন এবং পালিয়ামেণ্ট মহাসভাতেও প্রকাশ করিয়াছিলেন যে ভারতবর্ষীয়ের স্বজাতীয় লোক সকলকে উচ্চপদস্থ দেখিতে পারে না—অতএব উহাদিগকে উচ্চপদ দিয়া কাজ নাই । আজিও ইংরাজদের মধ্যে কেহ কেহ ঐ কথা বলিয়া থাকেন। এবং বিশেষ দুঃখের বিষয় এই ষে, ও কথা বলিবার সকল কারণ এখনও নিঃশেষিত হয় নাই । আমরা এখনও স্বজাতীয় লোকের সম্যকৃ গৌরব করিতে শিখি নাই । ইংরাজেরা যেমন সকল কথাতে এবং সকল কাজে স্বজাতীয় সকল লোকের সন্মান এবং মর্যাদা রক্ষা করিয়া চলেন, বাঙ্গালীদের এখনও সেরূপ শিক্ষা পাকিয় উঠে নাই। কিন্তু ভাবিয়া দেখ দেখি, যে সকল বাঙ্গালী ইংরাজী ভাষা এবং ইংরাজী বিদ্যা এমন উত্তমরূপে শিখিয়াছেন যে ঐ বিজাতীয়
পাতা:বিবিধ প্রবন্ধ (ভূদেব মুখোপাধ্যায়) দ্বিতীয় ভাগ.djvu/১০৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।