দ্বিতীয় ভাগ । ృo :) ভাষায় অনর্গল লিখিতে এবং বক্তৃতা করিতে পারেন, তাহীদের ক্ষমতা কি অল্প । অপর কোন ভাষায় ওরূপ লিখিতে অথবা বক্তৃতা করিতে কয়জন বড় ইংরাজই সমর্থ। শ্রুত আছে যে ইংলণ্ডের প্রধান মন্ত্ৰী ডিস্ৰেলি সাহেব যখন বার্লিন নগরে গমন করিয়াছিলেন তখন সেখানকার মন্ত্রি-সমিতির মধ্যে ভাল করিয়া ফরাসি-ভাষাও কহিতে পারেন নাই এবং সেই জন্ত বিসমার্ক তাহাকে ইংরাজী ভাষাতেই কথোপকথন করিতে বলিয়াছিলেন । আর যে যাহার পরিচিত সাহেবদিগের মধ্যেই দেখ না, তাহার মধ্যে কয়জন বিশুদ্ধ বাঙ্গাল অথবা বিশুদ্ধ হিন্দিতে আপনাদিগের মনের ভাব সকল সহজে ব্যক্ত করিতে পারেন । কিন্তু বাঙ্গালীর কেমন ইংরাজী শিখে, আর কত শিখে । ইংরাজেরা যে উহাদের অনাদর করেন, তাহার একটা হেতু আছে । অনাদর লা করিলে তাহাদিগের জাতীয়ভাব থাকে কৈ—আর আপনাদের অল্পসংস্থানই বা কৈ থাকে। কিন্তু উর্হাদিগের দেখাদেখি, আমাদিগেরও কি স্বদেশীয় কৃতবিদ্যগণকে অনাদর করিতে আছে ? মনে কর, মহামহোপাধ্যায় রাজেজলাল মিত্র কি একজন সামান্ত লোক ছিলেন, উইার স্থায় পণ্ডিত বিচক্ষণ তীক্ষদশী এবং বাগ্মী কয়জন লোক ছিলেন ? কিন্তু আমরা কি উছার সম্পূর্ণ গৌরব করিয়া থাকি ? অথবা যতদিন ইংরাজকেও উহার গৌরব করিতে না দেখিয়াছিলাম, ততদিন উছার প্রকৃত গৌরব করিতে জানিতাম ? উস্থার সমান আর কেহ থাকুন বা না থাকুন, কিন্তু আমাদিগের সম্পূর্ণ গৌরবের যোগ্য আরও অনেক আছেন। সে সকলকে আমাদিগের মাথায় করিয়া রাখা উচিত । তাহার পর ধর, র্যাহারা স্বজাতীয় ভাষাতেই গ্রন্থাদি রচনা করেন— ইংরাজের নিকট আদর খুজেন না, আমরা কি তাহাদিগেরও বেশ গৌরব করিতে পারি ? বঙ্কিমচন্দ্র কি একটা সামান্ত লোক ! আজি কালি উছার জুই একট পুস্তক ইংরাজীতে এবং জৰ্ম্মেণ ভাষায় অনুবাদিত হইতেছে দেখিয়৷ আমাদিগের মনে যদি একটু প্রকৃত ভক্তির উদ্রেক হইয়া থাকে ত বলিতে পারি না—কিন্তু তাহার পুৰ্ব্বে উনি যে কতটা ভক্তির পত্রি, তাহা সকলে বুঝিতে পারে নাই। একটা তথ্যকথা এই—ইংরাজমাত্রেই সকল বাঙ্গালীর অপেক্ষ বড়লোক নহেন । ষত ৰাঙ্গালী আছে, সকলের চেয়েই বড়লোক যদি এমন ইংরাজ থাকেন ত সে ইংরাজ এখানে আইসেন না। যদি বাঙ্গালী স্বজাতীয় প্রধান লোকদিগের পৃষ্ঠপুরক হইয় উঠে, তাহ হইলে এখনও দেখিতে পায় যে, বঙ্গভূমি সত্য সত্যই রত্নপ্রসবা। যে দেশে শিরোমণি এবং
পাতা:বিবিধ প্রবন্ধ (ভূদেব মুখোপাধ্যায়) দ্বিতীয় ভাগ.djvu/১০৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।