দ্বিতীয় ভাগ । ද්රි করিয়াছেঃ ইহাতেই বোধ হয় সাইরিয়াধীলী লোকেরাও জলপ্লাবনে ৰিশ্বাস করিত । ‘চীনীয় জাতি অতি প্রাচীন। উহাদিগের শাস্ত্রে লিখিত আছে যে, এক সময়ে চীন দেশে এক মহাজলপ্লাবন হইয়াছিল । সেই ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা হইতে কেবল পয়ান্স্ক’ নামক এক ব্যক্তি সপরিবারে রক্ষা পায়েন—আর সকলেই জলমগ্ন হইয়া প্রাণত্যাগ করে । কিন্তু চীনীয়েরা ঐ জলপ্লাবন যে সমুদায় পৃথিবী ব্যাপক হইয়াছিল, এমত বলে না। ‘গ্ৰীকৃ’ জাতীয়ের দুইট জলপ্লাবনের বিবরণ লিথিয়া গিয়াছেন । কিন্তু তদুভয়ই বিশেষ বিশেষ দেশব্যাপক হইয়াছিল—ঐ জলপ্লবনের দ্বারা সমুদায় ভূমণ্ডল একবারে প্লাবিত হইয়াছিল, এমত কথার প্রসঙ্গ নাই। ঐ দুই জলপ্লাবনের, প্রথমটা হইতে ওগাইইজেস এবং দ্বিতীয়ট হইতে ডিউকেলিয়ন এই দুই ব্যক্তি মাত্র রক্ষা পায়েন। “ফিমিকীয়' নামে আর একটা অতি প্রাচীন জাতির পুরাতন ইতিহাস প্রাপ্ত হওয়া যায়। পরন্তু সেই ইতিহাসে জলপ্লাবনের কোন কথারই উল্লেখ মনাই । খৃষ্টানদিগের বাইৰলে কথিত আছে যে, ‘লোয়া স্বয়ং এবং “সেমৃ” “হাম” ও “যাফেৎ” নামক র্তাহার তিন পুত্র, ইহারা পরমেশ্বরানুগ্রহে স্ব স্ব পত্নী সমভিব্যাহারে একখানি সুবৃহৎ অর্ণবযান প্রস্তুত করিয়া তাহাতে প্রবেশ করতঃ জলপ্লাবন হইতে রক্ষা পাইয়াছিলেন । উক্ত বাইবল গ্রন্থের ব্যাখ্যাতৃগণ কেহ কেহ বলেন যে, এই জলপ্লাবন খৃষ্ট জন্মিবার ২৩৪৮ বৎসর পূৰ্ব্বে ঘটিয়াছিল । উল্লিখিত বিবরণ-সমস্ত বিভিন্ন জাতীয় মরগণের পৌরাণিক আখ্যাম্বিক হইতে সঙ্কলিত হইল। নব্য ইউরোপীয় পণ্ডিতেরা বৈজ্ঞানিক গবেষণার দ্বারা সিদ্ধান্ত করিয়াছেন যে, মনুষ্য-জীব অপরাপর জীবের পরিণামেই উদ্ভূত হইয়াছে—স্বতন্ত্র ভাবে স্বফ্ট হয় নাই। সে উদ্ভবের কাল নিরূপণ অসাধ্য—এবং তাহা কোন এক সময়ে বা কোন এক নির্দিষ্ট স্থানেও হয় নাই। র্তাহারা ইহাও বলেন যে, পৃথিবীর এক্ষণে যে ভাগ ভূমি বা পৰ্ব্বত, কোন কালে সেই সকল ভাগ সাগরগর্ভস্থ ছিল—এবং সেই জন্তই ঐ সকল স্থানে সমুদ্রচর জীবদিগের কঙ্কালাদি এবং জলসংঘর্ষের চিকু দর্শনে একটু সাধারণ জলপ্লাবনের কল্পনা হুইয়া গিয়াছে।
পাতা:বিবিধ প্রবন্ধ (ভূদেব মুখোপাধ্যায়) দ্বিতীয় ভাগ.djvu/১১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।