છે ૦૨ বিবিধ প্রবন্ধ । জয়দেব এবং চৈতন্য মহাপ্ৰভু জন্মগ্রহণ করিয়াছিলেন সে দেশের সকল লোক কখনই জন, চার্লসূ. হেনরি, মাথু হইতে নিকৃষ্ট হইতে পারে না। * * * * * তবে সমস্ত রাজশক্তি ইংরাজের হস্তগত, ইংরাজের অনুগ্রহ ব্যতিরেকে চাকুরি হয় না, পদমৰ্য্যাদাও বাড়ে না, কোন কিছুতেই সুবিধা পাওয়া যায় না, এই জন্য লোকে ইংরাজের মনস্তুষ্টি করিতে যায়—এবং ইংরাজ আমাদের মধ্যে পরস্পর ঈর্ষার চিকু দেখিতে পাইলে কিছু বিশেষ তুষ্টই হইয়া থাকে । এই জন্ত অনেক অল্প-প্রাণ বাঙ্গালী ইংরাজদিগের সাক্ষাতে স্বজাতীয়ের নিন্দাস্থচক অনেক কথাই কহিয়া ফেলে । একজন ইংরাজের সহিত কথোপকথন হইতে হইতে এ দেশে স্ত্রীস্বাধীনতা সম্বন্ধে কথা উঠিল । তিনি বলিলেন “—স্ত্রীলোকদিগকে স্বাধীনতা না দেওয়া বড় অপকৰ্ম্ম।” * * আমি বলিলাম "স্ত্রীস্বাধীনতা একটা নূতন বিশেষ কথা বলিয়াই আমার বোধ হয় না । যে দেশের পুরুষের যতটা স্বাধীনতা ভোগ করে, সে দেশের স্ত্রীলোকেরা তাহা অপেক্ষ কিছু অল্প পরিমাণে স্বাধীনতা পাইয় থাকে—এই নিয়ম বই আর কিছুই নহে। তোমাদের ইংলণ্ডে অাজ ও ত স্ত্রীলোকের সর্ববিষয়ে স্বাধীনতার বিষয়ে গণ্ডগোল চলিতেছে ; অতএব সেখানেও পুরুষের স্বাধীনতা অপেক্ষ স্ত্রীলোকের স্বাধীনতা অবশুই কম হইবে।” * * *তাহ বটে, কিন্তু তোমরা ত আপন আপনির মধ্যেও স্ত্রীলোকদিগকে সভাস্থলে আসিতে দেও না—ইহার কারণ কি ?” এই বলিয়াই ইংরাজট বলিলেন—অমুক বাবু আমাকে বলিয়াছেন যে, “বাঙ্গালীরা বরং ইংরাজদিগের সভায় আপনাদিগের স্ত্রীলোকদিগকে লইয়া যাইতে পারে, কিন্তু স্বজাতীয় পুরুষদিগের প্রতি তাহদের প্রগাঢ়তত্ব অবিশ্বাস ॥” এই কথাটা শুনিয়া একবারে অবাকৃ হইয়া রহিলাম। র্তাহার “বাবুটকে” চিনিতাম। মনে করিলাম আর কোন কথা বলিব না, কিন্তু ক্ৰোধ সম্বরণ হইল না । বলিলাম, “আপনার অমন সকল কথায় কিরূপে বিশ্বাস করেন, আমি বুঝিয়া উঠিতে পারি না। ও কথাটা শুনিলেই ত অবিশ্বাস হয় । যদি কোন চীনীয় কি অপর জাতীয় কোন লোক আমার কাছে ঐরুপ বলিত যে, সে স্বজাতীয় লোকের অপেক্ষ আমাকে অধিক শ্রদ্ধা করে, তবে আমি অবগুই অনুমান করিতাম যে, ঐ ব্যক্তি প্রকৃত কথা বলিতেছে না, তাহার কোন স্বার্থসিদ্ধির অভিপ্রায় আছে। কিন্তু আপনার অনায়াসে ঐরুপ কথাগুলা গিলিয়া ফেলেন কেমন করিয়া ? ইংরাজ কি
পাতা:বিবিধ প্রবন্ধ (ভূদেব মুখোপাধ্যায়) দ্বিতীয় ভাগ.djvu/১১০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।