दिउँौशू ভাগ । ১০৫ ইংরাজের সহিত ঐ সম্বন্ধে কথা কহায় তিনি ঈষৎ হাস্ত সহকারে বলিলেন, “তুমি কি মনে কর যে ভারতবর্ষকে আত্মশাসনে সক্ষম করাই ইংরাজ গবর্ণ মেণ্টের উদেণ্ড ?” আমি বলিলাম “আমি স্বপ্নেও তাহা মনে করি নাই— আমি এই মনে করি ষে ওরূপ একটা উচ্চতম সন্ধুদ্দেষ্ঠে লক্ষ্য স্থির রাখিতে পারিলে রাজ্যের সুপালন হয়। যেমন যিশু বলিয়াছেন, ঈশ্বরের দ্যায় পূর্ণ হইবার চেষ্টা কর । তাহাত বস্তুতঃ কেহ হইতে পারে না, কিন্তু ওরূপ আদর্শ মানসচক্ষে রাখিয় চলায়, অনেকের শুভ ফল ফলে । আমি সেইরূপ ভাবিয়া মনে করি যে ভারতবর্ষ শাসন সম্বন্ধে ইংরাজ পূৰ্ব্বে পূৰ্ব্বে যাহা বলিতেন তাহা ভালই বলিতেন , উহাতে কতকটা উপকার দর্শিবার সম্ভাবনা ছিল । এখন ঐ কথার বদলে যে কথা উঠিয়াছে তাহাতে কি শুভ ফল দেখিতেছেন ?”— “এখন কি কথা উঠিয়াছে ?” আমি—-“এখন সময়ের অসময়ের বিনা বিচারে বলা হইতেছে, এদেশে সকল বিষয়ে ইংরাজ প্রাধান্ত রক্ষণ করাতেই এ দেশীয় লোকের উপকার - সেই জন্ত ইংরাজ-প্রাধান্ত রক্ষণ করাই সৰ্ব্বাপেক্ষায় অধিক প্রয়োজনীয়।” তিনি বলিলেন - “এমন কথা কে বলে ?” । আমি বলিলাম ~“অমন কথা আজি কালি কে না বলে ?—গ্রান্ট ডফ সাহেব ত স্পষ্টাক্ষরে লিখিয়া ছাপাইয়াছেন যে, কোন ইংরাজ কোন ভারতবাসীর প্রতি অত্যাচার করিলে, ইংরাজের কোন দণ্ড হওয়া উচিত নয় । কারণ ইংরাজভীতি ভারতবর্যায়ের হৃদয়ে খুব বদ্ধমূল করাই আমাদিগের কৰ্ত্তব্য —এমন কথাতেও ত কোন ইংরাজ কিছু বলিলেন না, প্রত্যুত ওরূপ কথা ষে লিখিয়াছিল, তাহাকেই প্রদেশীয় শাসনকৰ্ত্ত করিয়া পাঠান হইল ! কিন্তু ঐ মত রক্ষা করিয়া চলিলে অর্থাৎ সাধারণতঃ ভারতবাসীর প্রতি ইংরাজের দৌরাত্ম্য বাড়িতে দিলে ফল কি হইবে ? স্যায়পরতা রক্ষা না করিলেই রাজ্য ছারখার হয়-স্থায়ী হয় না ।” অপর একটী সময়ে একজন উচ্চপদস্থ ইংরাজের সহিত আত্মশাসন সম্বন্ধে অামার কথোপকথন হইয়াছিল । তিনি বলিলেন, “এখনও দেশীয় লোকের হস্তে কোনরূপ আত্মশাসন-শক্তি দিবার সময় হয় নাই— এখনও গবর্ণমেণ্টের বল দেশের লোকের উপর তেমন চাপিয়া বসে নাই ।” অামি বলিলাম— “মহাশয় মনে করিতেছেন গবর্ণমেণ্টের বন্ধন আরও দৃঢ় হওয়া আবশুক । কিন্তু আমরা দেখিতেছি ষে, গমণমেণ্টের বাধন এমনি কড়াকড় হইয়া বসিয়াছে যে, প্রায় পক্ষাঘাতের উপক্রম হইয়াছে।” উল্লিখিত মহাশয় সেই পৰ্য্যন্ত 38 *
পাতা:বিবিধ প্রবন্ধ (ভূদেব মুখোপাধ্যায়) দ্বিতীয় ভাগ.djvu/১১৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।