পাতা:বিবিধ প্রবন্ধ (ভূদেব মুখোপাধ্যায়) দ্বিতীয় ভাগ.djvu/১১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Seb" বিবিধ প্রবন্ধ । গামীর বলেন যে, তিনি সকলকেই স্বাধীন বাণিজ্যের সার তথ্য বুৰাইয়া দিলেন এবং সেই জন্তই ১৮৪৬ অব্দে প্রকাশ্ব বক্তৃতায় নিৰ্ব্বন্ধ সহকারে বলিয়াছিলেন, “আর দশ বৎসর মধ্যেই সমুদয় পৃথিবীময় স্বাধীনবাণিজ্যপ্রণালী প্রচলিত হইয়া যাইবে ” ইংরাজ অন্তের ইষ্টানিষ্ট কিছুই বুঝিতে পারে না । সে পরচিত্তবৃত্তি এবং বুদ্ধিবৃত্তি প্রবেশনী শক্তিতে একেবারেই বঞ্চিত। যাহাতে তাহার ভাল তাহাতে অপরের মন্দ হইতে পারে ইংরাজের এ বোধটা নাই । অথচ এই স্বাধীন বাণিজ্য ব্যাপারের বিচারটা একবার স্থলদৃষ্টিতে দেখিলেই ইহার অসারতা দেদীপ্যমান হইয় পড়ে। বিচারটা এই –কোন দেশের বিভিন্ন ভাগে বিভিন্ন দ্রব্যজাত স্বল্পতর পরিশ্রমে এবং সুন্দরতররূপে জন্মে । ঐ বিভিন্ন প্রদেশের লোকেরা যদি অব্যাহতে আপনাপন প্রদেশজাত দ্রব্যের বিনিময় করিতে পায় তাহ হইলে কি সকলেরই ভোগমুখ বৃদ্ধি হয় না ? অবশুই হয়। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ সম্বন্ধে ঐ প্রথা প্রবর্তিত করিলেই স্বাধীন বাণিজ্য প্রথা জন্মে, অতএব ঐ কথাও শুভকরী । এস্থলে স্পষ্টই দেখা যায় যে পৃথিবীর ভিন্ন ভিন্ন দেশ একরাজ্যের অন্তর্গত বিভিন্ন প্রদেশের দ্যায় নহে । উহাদের রাজা ভিন্ন, সমাজ ভিন্ন, লাভালাভ ভিন্ন । দ্বিতীয়তঃ, খনিজ ও ক্ল্যাদিপ্রস্থত দ্রব্যসমূহের প্রতি যে কথা খাটে, মানব কৌশলজাত শিল্পদ্রব্যের প্রতি সে কথাগুলি ঠিক খাটে না, শিল্পজাত সকল দেশে সমান হইলেও হইতে পারে । তদ্ভিন্ন ইংরাজ যে ভাবে স্বাধীন-বাণিজ্য চালাইতে চাহেন তাহাতে সকলেরই সমূহ ক্ষতি । ভারতবর্ষের দৃষ্টান্ত লইয়াই দেখ। ভারতবর্ষ সম্বন্ধে বলা হয়, এখানে তুলা জন্মে বটে, কিন্তু ঐ তুলা হইতে বন্ধ প্রস্তুত করায় ভারতবর্ষে যত পরিশ্রম লাগে ইংলণ্ডে তাহ লাগে না । ভারতবর্ষের তত্ত্ববায়দিগের হস্তের বল লাগে, ইংলণ্ডে বাষ্পীয় যন্ত্রের বলে কার্য্য সম্পন্ন হয়। কিন্তু বাষ্পীয় যন্ত্রের বল ভারতবর্ষেই প্রযুক্ত হউক না, তাহা হইলে দোকর জাহাজ ভাড়ার ব্যয় এবং অন্তান্ত অনেক আনুষঙ্গিক ব্যয় বাচিয়া যাইবে । ভারতবর্ষীয়ের যন্ত্র প্রস্তুত করিতে জানে না । তাহা শিখা ও বা শিখিবার অবকাশ দাও । যতদিন যন্ত্র প্রস্তুত করিতে না পারে যন্ত্রই পাঠাইতে থাক, বিনা শুল্কে কাপড় পাঠাও কেন ? কয়েক বৎসরের জন্য আমদানী কাপড়ের উপর “কড় শুষ্ক স্থাপিত হইলেই এদেশে অনেক কল বসে। ফলকথা, স্বাধীন বাণিজ্য প্রথায় অনেক অপচয় । মার্কিনেরা এবিষয়ে বড় যুক্তিযুক্ত প্রণালী অবলম্বন করে। ইউরোপ