দ্বিতীয় ভাগ । >> 。 আছে, “যুক্তিহীন বিচারে তু ধৰ্ম্মহানিঃ প্রজায়তে ” । শাস্ত্রের আদেশগুলি আমাদের যুক্তির মুখে বুঝিয়া লইতে শুধু স্বাধীনতা দেওয়া আছে এমন নয়, বিশেষ আদেশ করাই আছে। প্রতিকুল যুক্তিগুলি শুন, অনুকুল যুক্তিগুলি তাবিয়া দেখ, ভক্তি থাকিলে উপযুক্ত গুরু পাইবে এবং অনুকুল যুক্তিগুলিই ধরিতে পারিবে, সংশয় ঢুকিতে পরিবে না এবং অন্ধ গোড়ামিও করিতে হইবে না । চেষ্টা করিলেই এরূপ “প্রকৃত স্বাধীন চিন্তার” বলে তথ্য জানিতে পারিবে এবং বুঝিবে যে, র্যাহারা আপনার শাস্ত্র মানে তাহারাই স্বাধীন। তাহীদের মন পরাধীন হয় নাই । এই “স্বাধীনতা’ আছে বলিয়াই আমাদের দেশের ব্যবস্থাপকের কখন প্রাচীন শাস্ত্রাকুশাসন ত্যাগ করেন নাই । “প্রাচীন শাস্বাচার এখন আর থাটে না, এখন অপরের আচার গ্রহণ করিতে হইবে”—এমন কথা আমাদের একান্ত আত্মগৌরবসম্পন্ন মহাত্মাদিগের মনে কখনও উদয় হইতে পারে নাই । “এখনকার অবস্থায় এরূপ করা ভাল বোধ হইতেছে বটে, কিন্তু আরও বিবেচনা করিয়া দেখা যাউক যে সেইরূপই ভাল কি না” ?—“অনেক ভাল লোকেরই ভাল বোধ হইতেছে ? তবে ভাল হওয়া অসম্ভব নয়” ।–“কিন্তু প্রাচীন সৰ্ব্বদিগৃদশী শাস্ত্রকারের তাহা হইলে সে উপদেশ দেন নাই কেন ? আমাদেরই ত ভুল হইবার কথা” । “তাই ত এই শ্লোকটর প্রকৃত অর্থ কি এইরূপ নয় ? ঋষিরা এ বিষয়ে কতকটা মত দিয়াছেন বলিয়াই ত দেখাইতেছে! আচ্ছা যতটুকু মত দিয়াছেন বলিয়া বুঝা যাইতেছে তাহ যখন পবিত্রত রক্ষার-নিবৃত্তিমার্গের-অনুকুল, তখন ততটুকু মাত্র আচার ও ব্যবস্থা ধীরে ধীরে পরিবর্তন করা যাউক” ।—আমাদের দেশের স্বাধীন চিন্তু। এইরূপ । এবং এই জন্যই সকল সময়ে আমাদের শাস্ত্র বচনের অনুসন্ধান । ফলতঃ, ভক্তিমান, আত্মগৌরবসম্পন্ন, ধীরস্বভাব ব্যক্তির উচ্চ খলতার উপায় নাই । সংযত ব্যক্তিকে সকল কাজ সাবধানে করিতে হয় । তাহাকে যদি স্বাধীনতাহীন বলিতে পার তবে হিন্দু ও তোমার কাছে স্বাধীন চিন্তাবিহীন । বিদ্যাসাগর মহাশয় যখন বিধবা বিবাহ প্রচলন চেষ্টা করিয়াছিলেন, তখন আমাদের সংস্কারকের তাহাকে ইংরাজী শিক্ষার অনুরূপ মত প্রচার করিতে দেখিয়া নিজেদের দ্যায় “স্বাধীন চিন্তাশীল” বলিয়া স্থির করেন এবং আনন্দে অধীর হন। তিনি যে আচার ব্যবহারে নৈষ্টিক হিন্দু ছিলেন, সেটা তাহাদের রভু বিসদৃশ ঠেকিত । শেষে তিনি যখন সন্মতি আইনের বিরুদ্ধে মত দিলেম
পাতা:বিবিধ প্রবন্ধ (ভূদেব মুখোপাধ্যায়) দ্বিতীয় ভাগ.djvu/১১৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।