পাতা:বিবিধ প্রবন্ধ (ভূদেব মুখোপাধ্যায়) দ্বিতীয় ভাগ.djvu/১৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১২৬ বিবিধ প্রবন্ধ । হুইলেই দ্রব্যের প্রতি স্বত্বাধিকারীর যত্ন হয়। প্রথমে স্বত্বটা গোষ্ঠীপতি বা গৃহস্বামীতে প্রকটীভূত হইয়া থাকে। বন জঙ্গল কাটিয়া যে ব্যক্তি কোন ভূমির আবাদ করিবে, সে ঐ ভূমির স্বত্বাধিকারী হইবে, যে সমাজে এরূপ ব্যবস্থা প্রচলিত হয়, ( যথা মনুসংহিতার সময়ে এদেশে হইয়াছিল ) তথায় অনাবাদী ভূমির সত্বরেই আবাদ হইয়া যায়। তাদৃশ সমাজে কৃষির পারিপাট্যও জন্মে । তদুপ সমাজে পিতৃধনে সকল পুত্রেরই সমান অধিকার স্বীকৃত হয় । যে সমাজে ওরূপ নিয়ম না হইয়া সমুদয় বা অধিকাংশ ভূমি রাজার অথবা প্রধান প্রধান ভূম্যধিকারীর বস্তু বলিয়া অবধারিত হয় ( যেমন ফিউডাল সিষ্টেমের সময় ইউরোপে হইয়াছিল ) তথায় অনাবাদী ভূমির সত্বরে আবাদও হয় না, আর কৃষিকার্য্যের তেমন পারিপাট্যও জন্মে না। ইউরোপীয়দিগের মধ্যে যে সকল দেশে ফরাসী রাষ্ট্রবিপ্লবের পর স্ব স্ব ক্ষেত্রে কৃষকবর্গের নিবৃঢ় স্বত্ব স্বীকৃত হইয়াছে সেই সকল দেশেই ভূমির আবাদ ভাল হইয়াছে এবং কৃষিকার্য্যেরও উৎকর্ষ জন্মিয়াছে। কোন কোন দেশে এখনও ভূমিতে প্রজার স্বত্ব স্বীকৃত হয় না—যথা ইংলণ্ডে । ওখানে প্রজাস্বত্ব স্বীকৃত হওয়া উচিত এই কথা বলিয়া আজি কালি অনেকে মত প্রচার করিতেছেন এবং ভূম্যধিকারিবর্গের বিহারের জন্ত প্রকাও প্রকাগু ভূমিভাগ যে অকৃষ্ট থাকিবে আর যাহা ও কৃষ্ট হইবে তাহ পাশুপাল্যের জন্ত ব্যবহৃত হইবে, ইহাও অতি অদ্যায্য ব্যবস্থা বলিয়া অনেকের প্রতীত হইতেছে । ইংলণ্ডে ভূম্যধিকারিবর্গের প্রভূত অধিক এবং দায়াধিকার সম্বন্ধীয় ব্যবস্থা সকল স্বত্ব বিভাগের প্রতিকূল । ওখানে পৈত্রিক ধনের অধিকার জ্যেষ্ঠ পুত্রতেই বৰ্ত্তে আর কোনও পুত্র কিছুই পায় না। এরূপে ঘটিত যে সমাজ তাহার অন্তরে জনগণের সংখ্যা বৃদ্ধিসহকারে জীবনোপায় বৃদ্ধি পায় না, সে সমাজের লোককে বাচিতে হইলে স্বদেশের বাহিরে চলিয়া অসিতে হয় অথবা কৃষি ভিন্ন অন্ত কোন জীবনোপায় বাহির করিতে হয়। ইংরাজের দুইই করিয়াছেন । স্বদেশ হইতে দলে দলে বাহির হইয়া অপরাপর দেশ অধিকার করিয়াছেন আর আপনাদের দেশেও কলকারখানা প্রস্তুত করিয়া সমস্ত পৃথিবীময় আপনাদের শিল্পজাত বিক্রয় করিয়া বেড়াইতেছেন । মুসলমানদিগের মধ্যে বিজিত রাজ্যের ভূমিতে রাজার স্বত্ব স্বীন্ধত হয় বটে, কিন্তু পৈতৃক ধনে পুত্র কন্যা উভয় প্রকার সস্তানেরই স্বত্ব গ্রাহ হইয়া থাকে। তাহা হইলেই ভূমিবিভাগ জন্মে এবং স্বদেশ মধ্যেই অধিক লোকের জীবনো