পাতা:বিবিধ প্রবন্ধ (ভূদেব মুখোপাধ্যায়) দ্বিতীয় ভাগ.djvu/১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দ্বিতীয় ভাগ। . স্বতরাং তাৎকালিক কবিগণ সেই বাসন পরিপূরণের চেষ্ট পাইয়া আপনাদের অলৌকিক কবিশক্তি প্রভাবে প্রাচীন বৃত্তান্ত সমুদায় পরিকল্পিত করিয়া গিয়াছেন। অতএব ইহঁাদিগের মতে পূৰ্ব্বকালিক লোকের যে বৃহৎ শরীর বর্ণিত হইয়াছে, তাহা কেবল কবিগণের কল্পনামাত্র, উহা কোন প্রকার প্রকৃত শরীরের বর্ণনী নহে । ঐ সকল আধুনিক পণ্ডিতেরা ইহাও কহিয়া থাকেন, “দেখ জনসাধারণের সংস্কার এই যে, প্রশস্তমনা ব্যক্তির শরীর তদনুরূপ প্রশস্ত না হইলে শোভ পায় না। অতএব মনুষ্য প্রকৃতির রহস্যামুসন্ধায়ী কবিগণ যখন সত্যকালকে পরম ধৰ্ম্মের কাল বলিয়’ বর্ণন করিলেন, তখন সেই সময়ের লোকসমুহকে সুবিন্যস্ত সুদীর্ঘাবয়ব ও বলিবেন ইহাতে বৈচিত্র্য কি ?” —()*()— সত্যকালে মনুষ্যের সুদীর্ঘ আয়ু । জগতে মনুষ্য বুদ্ধির অগম্য নানা প্রকার ঘটনা ঘটিয়া থাকে, কিন্তু তন্মধ্যে মৃত্যুই সৰ্ব্বাপেক্ষা প্রধান । আমরা বার বার লোকের মৃত্যু দৰ্শন করিতেছি, অনেকের মৃত্যু হইতেছে শুনিতেছি, আমাদের পূৰ্ব্বপুরুষ সমস্ত ক্রমে ক্রমে ঐ মৃত্যুর কবলিত হইয়াছেন জানিয়াছি, তথাপি কোন ব্যক্তির মৃত্যুশয্যার পার্থে একাকী বসিয়া থাকিলে মনের কেমন ঔদাস্য জন্মে, ভয়াবহ মৃত্যুর প্রতি একবার নিৰিষ্টমনা হইলে আর শীঘ্র অন্তমনা হইতে পারা যায় না, একেবারে তদগতচিত্ত হইয়া উহারই প্রকৃতি পৰ্য্যালোচনা করিতে হয় । - ঘদি এত দেখিয়া শুনিয়াও আমাদিগের এইরূপ ঘটে, তবে পৃথিবীর আদিমাবস্থায় মৃত্যু দর্শনে জনসমূহের মন যে কি পৰ্যন্ত উদ্বিগ্ন, ভাত, সঙ্কুচিত এবং বিচলিত হইত তাহা কে বলিতে পারে ? তখন লোকসংখ্যা অধিক ছিল না, বহু মৃত্যুঘটনাও ঘটে নাই, সুতরাং মৃত্যু যে একটা অবগুস্তানী অনিবাৰ্য্য বস্তু তাহ সম্যক্ প্রতীতই হয় নাই । বোধ হয় যে, এই জন্তই পুৰ্ব্বতন কালের লোক সকল অমর হইবার নিমিত্ত এত অধিক প্রয়াস পাইয়াছিলেন। সাধ্যায়ত্ত কাৰ্য্যের সাধনেই লোকে যত্নবান হইয়া থাকে—যাহা কদাপি হইবার নহে, তাদৃশ কাৰ্য্য সম্পাদনে কেহই সচেষ্ট হুয়েন না। পূৰ্ব্বকালের লোক সকল অমর হুইবার