পাতা:বিবিধ প্রবন্ধ (ভূদেব মুখোপাধ্যায়) দ্বিতীয় ভাগ.djvu/১৬৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>Qb" বিবিধ প্রবন্ধ । অতি অসামান্ত বস্তু । আমার বোধ হয়, পৃথিবীর আর কোন দেশে এই বিষয়ের প্রকৃতভাব সম্যকৃরূপে উপলব্ধ হয় নাই । ভাবটী এই ;–“যেমন ব্যায়ামচৰ্চা অর্থাৎ আসনাদিদ্বারা শরীরের বাহপেশী সমস্তকে দৃঢ় এবং সবল করিতে হয়, সেইরূপ অন্তত্ত্বক এবং পেশীসমস্তকে দৃঢ় এবং সবল করা উচিত এবং তাহ করা যাইতে পারে।” বাস্তবিক অন্তস্তৃক এবং পেশীদিগের ব্যায়াম সাধনের নামই হঠযোগ’ । হঠযোগ অনেক প্রকার। তন্মধ্যে ‘নেতা’ ‘ধৌতী’ এবং ‘ব স্ত্রী’র নাম অনেকে শুনিয়াছেন, এবং কেহ কেহ উহাদিগের অনুষ্ঠানও স্ব স্ব চক্ষে দেখিয়া থাকিবেন । "নেতা’র অনুষ্ঠান নাসিক দ্বারা জলশোষণ করিয়া সেই জল মুখবিবর দ্বারা নির্গত করা ‘ধৌতী’র অনুষ্ঠান জলপান করিয়া তাহা উদর হইতে পুনৰ্ব্বার উদগীর্ণ করা । বস্তীর অনুষ্ঠান জলের উপর বসিয়া গুহ্যদ্বার দিয়া জল তুলিয়া লইয়া ক্ষণকাল বিলম্বে সেই জল ঐ দ্বার দিয়া পরিত্যাগ করা । এই ত্ৰিবিধ অনুষ্ঠানই লোকের চাক্ষুষ প্রত্যক্ষ হইয়াছে। এক্ষণে ‘নেতা ধোঁতী’ করিতে জানেন যদিও এমন লোক দুই একজন দেখিতে পাওয়া যায়—“বস্তী” করিতে পারেন এমত ব্যক্তি নিতাস্তই বিরল । যাহার এই ত্ৰিবিধ যোগের অনুষ্ঠান দ্বারা শরীরের আভ্যন্তরভাগ প্রত্যহ সুচারুরূপে ধৌত করিয়া ফেলিতে পরিবেন, তাহারা যে অবশুই শ্লেষ্মা, অজীর্ণ এবং উদরাময়ের হস্ত হইতে অব্যাহতি পাইবেন, সে কথা বলা বাহুল্য মাত্র । কিন্তু হঠযোগ ঐ ত্ৰিবিধ অনুষ্ঠানেই পর্য্যবসিত নহে। হঠযোগ মনুষ্য শরীরের যাবতীয় অনৈচ্ছিক পেশীকে ইচ্ছাবৃত্তির বশীভূত করিতে চায়। ইংরাজীবিজ্ঞানশিক্ষিত সকলেই জানেন যে, শরীরে দুই প্রকার পেশী আছে। এক প্রকার পেশী জীবের ইচ্ছাধীন হইয়া কাৰ্য্য করে—যেমন হাতের, পায়ের, চক্ষুর এবং অন্তান্ত অঙ্গের পেশী। অার এক প্রথার পেশী ইচ্ছার অধীন নহে ; ইচ্ছ। না করিলেও তাহারা আপনাপন কাৰ্য্য করিতে থাকে, যেমন হৃৎপিণ্ডের এবং ফুস ফুসের পেশী ; অথবা ইচ্ছা করিলেও কোন কাজ করে না, যেমন কাণের পাতার পেশী। হঠযোগ ঐ সকল অনৈচ্ছিক পেশীকে ইচ্ছাবৃত্তির আয়ত্তাধীন করিবার নিমিত্ত যত্ন করে । “এ কার্য্য অস্বাভাবিক -এ কার্য্য অসাধ্য” যদি এরূপ বলিয়া কেহ নিবৃত্তি করিতে যান হঠযোগ সে কথা শুনে না। —বলে, “কি স্বাভাবিক আর কি অস্বাভাবিক তাহার কোন ঠিকানাই নাই; যতক্ষণ যাহা না হয়, ততক্ষণই তাহ অস্বাভাবিক—একবার হইয়া উঠিলে আর তাহা অস্বাভাবিক থাকে না ।” যদি ইউরোপীয় বিজ্ঞানের স্বাদগ্রাহী কেহ বলেন