দ্বিতীয় ভাগ । Vులి রূপ এবং আকারের স্থির চিস্তায় নিবিষ্ট হইতে হয়, এবং এই বিধির অনুযায়ী কাৰ্য্য করিলেই “কাল”“সংখ্যা”এবং “রূপ” এই তিন বিষয়ে মনের অভিনিবেশ আরম্ভ হইল। এই তিনটী বিষয় যে সমস্ত মানস ব্যাপারের ভিত্তি মূলস্বরূপ এবং সকল মানসব্যাপারই ঐ ত্ৰিবিধ জ্ঞান বিশিষ্ট থাকে একথা কাহাকেও বুঝাইতে হয় না। বস্তুতঃ জপ প্রণালীকে যে অন্তর পূজার প্রারম্ভ বলা যায় তাহার কারণ ইতাম ধ্যানভাগের গুণে রূপের এবং আকারের স্মরণ শক্তি সম্বৰ্দ্ধিত হয়। কিন্তু, বিশুদ্ধ মানসজপে সংখ্যা এবং কালকেও মানস ব্যাপারের আয়ত্ত করিয়া লয় । মানসজপে কর ধরিয়া জপের সংথ্যা রাখিতে হয় না। মনের মধ্যেই একটা বর্ণময়ী মালার স্থষ্টি করিয়া রাখিতে হয় এবং ইষ্ট দেবতার মূৰ্ত্তি ধ্যান করিতে করিতে সেই মনোময়ী মালার দ্বারা জপের সংখ্যা করিয়া যাইতে হয়। মানুষের মন কোন এক সময়ে একাধিক কাৰ্য্যে নিবিষ্ট হইতে পারে কি না, এই কথা লইয়া প্রাচীন পণ্ডিতদিগের মধ্যে অনেক তর্ক বিতর্ক হইয়৷ গিয়াছে । অনেকেই সিদ্ধান্ত করেন যে এক সময়ে একাধিক কার্য্যে নিবিষ্ট হওয়া মনুষ্য মনের অসাধ্য। কিন্তু তান্ত্রিকেরা এই মত স্বীকার করেন না । র্তাহারা বলেন মানুষ চলিয়া যাইতে যাইতে কোন বিষয় ভাবিতে পারে, করে জপের সাংখ্যা রাখিতে রাখিতে ইষ্টমূৰ্ত্তির ধ্যান করিতে পারে, মুখে কথা বলিতে বলিতে মনে চিন্তা করিতে পারে । তাহারা বলেন, সাধন করিলে এক সময়ে দুই কাজ কেন, বহুসংখ্যক কাজ মনুষ্য মনে নির্বাহিত হইতে পারে। মনোময়ী মালার জপের সংখ্য রাখিতে রাখিতে অবিচ্ছেদে ইষ্ট দেবতার মূৰ্ত্তি ধ্যান করা অসাধ্য ব্যাপার নহে। প্রথমে কিছুদিন ধ্যানের ভঙ্গ হইতে থাকিবে, কিন্তু অভ্যাস দৃঢ় হইয়া গেলে আর কোন ব্যাঘাত হইবে ন, দুই কাৰ্য্যই অবাধে এক সময়ে চলিবে । তন্ত্রের মতে কোন বিষয়ের তাৎপৰ্য্য বুঝিলেই তাহার শিক্ষা হয় না, স্মৃতিতে তাহার ধারণা হইয় গেলেও শিক্ষা হয় না, শিক্ষণীয় ব্যাপারটা যতক্ষণ অভ্যাসগুণে মনের অঙ্গীভূত না হইয়া যায় অর্থাৎ যতক্ষণ বিনা জ্ঞানকৃত মনোযোগেও উহাম সাধন না হয় ততক্ষণ শিক্ষার পূর্ণত জন্মে না। এই কথাটা অতি সার কথা এবং আজি কালিকার শিক্ষাপ্রণালী এই কথাটীর অনুযায়ী কাৰ্য্য না করায় অনেকানেক স্থলে বিপথগামিনী হইতেছে । ইউরোপীয় বিজ্ঞানাচার্য্যেরা এক্ষণে - বলিতেছেন মস্তিষ্কের সর্বনিম্ন অর্থাৎ পঞ্চম ভাগে শিক্ষিত বিষয় সমস্ত সংস্কার
পাতা:বিবিধ প্রবন্ধ (ভূদেব মুখোপাধ্যায়) দ্বিতীয় ভাগ.djvu/১৭১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।