১৭২ বিবিধ প্রবন্ধ । ভৈরবী চক্রের নিয়মও ঐ প্রকার। তবে এই চক্রে ব্ৰহ্মজ্ঞানের পূর্ণত অপেক্ষা করে না এবং সেই চক্রের নায়ক ব্যক্তিবিশেষেই নির্দিষ্ট হইয়া থাকেন। কিন্তু এ চক্রে ও জাতি কুল এবং আচারের পার্থক্য রক্ষা করিবার জন্ত নিষিদ্ধ। চক্র প্রবিষ্ট ব্যক্তিরা সকলেই ব্রাহ্মণ । চক্র হইতে নিবৃত্ত হইলেই তাহাদিগের মধ্যে বর্ণভেদ পুনঃপ্রবিষ্ট হইতে পারে। তন্ত্রের শিক্ষায় যেখানে জাতিভেদ নাই সেখানে ব্রাহ্মণ উপবীত ফেলিয়া শূদ্র হয় না। সেখানে উচ্চকাৰ্য্যে একত্রী কৃত সকলেই পবিত্র ও দ্বিজোত্তমের অবস্থায় উন্নত । সকল উচ্চ কার্য্যেই এদেশীয় সকল বর্ণের লোকদিগের সন্মিলনজন্ত ইহা কি সুন্দর ব্যবস্থা ! সন্মিলন জন্ত ব্ৰাহ্মণ শূদ্রে একত্রে খাইবার বা ছেলে মেয়ের বিবাহ দিবার প্রয়োজন নাই। দেবীর কার্য্যসাধন জন্ত “যখন” সকলে সম্পূর্ণ সন্মিলিত হইৰে “তখন” তোমরা সকলেই সৰ্ব্বোৎকৃষ্ট ব্রাহ্মণ ! ( >8 ) পঞ্চ-মকার । পঞ্চ মকরের কথা লইয়া অনেক তর্ক বিতর্ক হইয়া থাকে। যাহার। তন্ত্রশাস্ত্রের বিরুদ্ধবাদী তাহারা পঞ্চ-মকারের উল্লেখ করিয়া ঐ শাস্ত্রের নিন্দ করেন, যাহারা তান্ত্রিক প্রণালীর অনুকুল পক্ষ তাহারা অনেকেই পঞ্চমকারের কোন গুঢ় তাৎপৰ্য্য আছে বলিয়া নিশ্চিন্ত হয়েন । গুরুমুখে যেরূপ শুনিয়াছি তাহাতে আমার দৃঢ় প্রতীতি এই যে, পঞ্চমকারের যথাযথ প্রয়োগে গুণ আছে, দোষ নাই এবং উছার প্রকৃত তাৎপর্যা ও শাস্থে উল্লিখিত আছে । তন্ত্রশাস্ত্রোক্ত আসন, মুদ্র, পুজা, ধ্যান, সাধনাদির সম্বন্ধে যাহা যাহা বলা হইয়াছে তাহা স্মরণ করিলেই বোধ হইবে যে, এই শাস্ত্র অপরাপর ধৰ্ম্ম শাস্ত্রের দ্যায় কেবল মাত্র আধ্যাত্মিক বিষয় সমূহে শিক্ষা প্রদান করিয়া নিবৃত্ত হয় না। তন্ত্র, মসুয্যের দেহ, মন, বুদ্ধি, ধৰ্ম্ম, ব্যবহার, জ্ঞান, প্রভৃতি সকল বিষয়েরই উৎকর্ষ সাধনের উপযোগী ব্যবস্থা করিয়া দেয়। তন্ত্র, মমুষ্যের ধৰ্ম্মকে স্বতন্ত্র, জ্ঞানকে স্বতন্ত্র, দৈহিক কাৰ্য্যকে স্বতন্ত্র, সামাজিক ব্যবহারকে স্বতন্ত্র এবং উহীরা পরস্পর ঘনিষ্ঠসম্বন্ধবিহীন এরূপ মনে করিয়া শিক্ষাদান করে না। মানুষ এক এবং যাহার যাহার সহিত মানুষের সম্বন্ধ তাহাও সুতরাং এক । অতএব প্রকৃত শিক্ষার অধীনে উহার একদিকগামী এবং পরম্পরের বলবদ্ধক হইয়াই চলিবে, বিভিন্ন দিকৃগামী হইবে না। কেহ কাহাকে দূষিত বা দুৰ্ব্বল
পাতা:বিবিধ প্রবন্ধ (ভূদেব মুখোপাধ্যায়) দ্বিতীয় ভাগ.djvu/১৮০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।