দ্বিতীয় ভাগ । Yoል¢ অকারণে আর একটা দল বাড়াইলেন বলিয়াই ত বোধ হয়। শাস্ত্রে অতি সুস্পষ্টরূপে উক্ত হইয়াছে যে, কলিযুগে আগম বা তন্ত্রেরই প্রাধান্ত—অন্য কোন বিধানের নয়। শাস্ত্রে ইহাও স্বব্যক্ত আছে যে তন্ত্রের মধ্যে তন্ত্রবিশেষই সৰ্ব্ব প্রধান। ঐ তন্ত্ৰটী দেখিলেই জানিতে পারা যায় যে, তাহা হইতেই ব্রাহ্ম ধৰ্ম্মের উৎপত্তি হইয়াছে। তবে ব্রাহ্ম ধৰ্ম্মকে অনাৰ্য্যভাবে কলুষিত করিয়া কেন হিন্দু সমাজকে দুৰ্ব্বল করা হইতেছে ? কি জন্ত সনাতন ধৰ্ম্মের আধুনিকতা প্রতিপাদন করা হইতেছে? ইহার আনুপূৰ্ব্বিকতার লোপ করিয়া কি সদভিপ্রায় সিদ্ধ হইতেছে ? কোন কালে কোন দেশে কি ধৰ্ম্ম সংস্কার এরূপে সিদ্ধ হইয়াছে না হইতে পারে ? মানুষ ঐতিহাসিক জীব। মানুষ একেবারে পূর্বভাব পরিহার করিয়া নুতন ভাব পরিগ্রহ করিতে পারে না। যেমন চলিবার সময় একপদ অগ্রবর্তী হয় অপরপদ পূৰ্ব্বস্থানেই স্থির থাকে, সেইরূপ সংস্কার কার্ধ্যেও যে ভাব ছিল তাহ স্থিরতর রাখিয়া নুতন ভাবে অগ্রসর হইতে হয়। ব্রাহ্মের ইংরাজী লেখাপড়া শিখিয়াছেন, তাহারাই হিন্দু সমাজে সৰ্ব্বাপেক্ষায় সমধিক উৎসাহশীল, তাহাদিগেরই মনে জাতীয় উন্নতি সাধনের ইচ্ছা জাগ্রত হইয়াছে, এক আধটুকু পরস্পর বন্ধনের চিত্ত্বও তাহাদিগেরই মধ্যে দেখা দিয়াছিল,—আর কি বলিব ? তাহারা যে তন্ত্র শাস্ত্র হইতে আপনাদিগের মতবাদ প্রাপ্ত হইয়াছেন তাহার সম্যক্ প্রাধান্ত স্বীকার করুন সেই শাস্ত্র যে গুরু গ্রহণের অবশুকৰ্ত্তব্যতা নির্দেশ করিয়াছে তাহার তাৎপৰ্য্য উপলব্ধ করুন, স্ব স্ব প্রাধান্যের ইচ্ছা একেবারেই পরিহার করুন । তাহা করিলেই সাধারণ হিন্দু সমাজের গ্রাহ এবং সেই সমাজের অভাব মোচনের অভিপ্রায়ে সস্তুত এমন একটা সংস্কৃত শাস্ত্র ব্রাহ্মদিগের দাড়াইবার স্বল হইবে, বগুতাই যে একতার মূল তাহা প্রত্যক্ষীভূত হইবে এবং সন্মিলন যে প্রকৃত প্রাধান্ত সাধনের একমাত্র উপায় তাহাও সপ্রমাণ হইয়া উঠিবে। উইার ইহা না করিতে পারেন সাধারণ হিন্দু সমাজ হইতেই অপরে সেই কার্য্যে যে অগ্রসর হইবে তাহাতে আস্তিক মাত্রেরই সন্দেহ নাই । মদ্যমাংসাদি সেবন সম্বন্ধে প্রাচীন আৰ্য্য শাস্ত্রের প্রকৃত অভিমত মনুসংহিতার একটা বচনে সমুদ্ধত আছে— ন মাংস ভক্ষণে দোষে ন মস্কে নচ মৈথুনে। প্রবৃত্তিরেষা ভূতানাং নিবৃত্তিস্ত মহাফল । তন্ত্রশান্ত্রও অবিকল তাহাই বলে, “প্রায়” বলিলাম না এই জন্য যে
পাতা:বিবিধ প্রবন্ধ (ভূদেব মুখোপাধ্যায়) দ্বিতীয় ভাগ.djvu/১৮৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।