b" বিবিধ প্রবন্ধ ।ל হয় নাই, সে সকল স্থলেও রাজীকে যে যাজকদিগের মতানুসারে অনেক কৰ্ম্ম করিতে হইত, তাহার সন্দেহ নাই । ফলতঃ অতি পূৰ্ব্বকালে যাজকেরাই সাধারণ প্রজাগণের এক মাত্র সহায় ও শরণ হইয়াছিলেন। র্তাহারা নী থাকিলে দুবৃত্তি রাজাদিগের দৌরাত্ম্যে ও নিরন্তর যুদ্ধে প্রজাদিগের দুঃখের সীমা থাকিত না । রাজদৌরাত্ম্য নিবারণের আরও এক উপায় ছিল। পূৰ্ব্বেই বলা গিয়াছে যে, কোন এক কুলের লোক অপরাপর কুলোদ্ভব জনসমূহকে অধীন করিয়া আপনাদিগের কুলপতিকে সমুদয় প্রজার রাজা করিতেন । কিন্তু আপনারাও যে বিজিত জনগণের উপর কোন কর্তৃত্ব করিতেন না, এমত নহে। তাহারা রাজার স্বকুলোদ্ভব ব্যক্তি, র্তাহাদিগের সহায়তাতেই তিনি রাজ্যলাভ করিয়াছেন। অতএব তাহার রাজার স্থানে বিস্তীর্ণ ভূম্যধিকার গ্রহণ করিতেন, আর এরূপ নিয়ম করাইতেন যে, রাজা তাহাদিগকেই প্রধান প্রধান রাজকাৰ্য্যে নিযুক্ত এবং তাহাদিগকে লইয়াই রাজকাৰ্য্যের মন্ত্রণ করিবেন। এই সকল লোক ‘কুলীন-ভূম্যধিকারী’ নামে প্রসিদ্ধ হয়। এই ভূম্যধিকারীদিগের দ্বারাও প্রজা সাধারণের অনেক উপকার হইয়াছিল । রাজা তাহাদিগের ভয়ে নিতান্ত যথেচ্ছাচারী হইতে পারিতেন না, আর ভূম্যধিকারীরাও রাজার ভয়ে প্রজাদিগের প্রতি উচিত ব্যবহারের অধিক অন্যথা করিতেন না । এইরূপে শাসন-শক্তি, রাজ, যাজক এবং ভূম্যধিকারিবর্গেরই হস্তে সমৰ্পিত থাকে। প্রজাসাধারণের কোন বিশেষ ক্ষমতা থাকে না । কিন্তু ক্রমে ক্রমে জ্ঞানবৃদ্ধি হইয়া দেশমধ্যে শাস্তিভাবের প্রাচুর্ভাব হইলে বণিকৃবৃত্তির সোপান প্রশস্ত হয় । বাণিজ্যদ্বারা লোকের ধনসঞ্চয় হয় । তাহা হইলে ক্রমে ক্রমে প্রজাসাধারণের মধ্যে কাহার কাহার মনে শাসন-শক্তির কিয়দংশ গ্রহণের ইচ্ছা জন্মে। অনেকের এইরূপ ইচ্ছা হইলে সুতরাং রাজা, ভূম্যধিকারী ও যাজকবর্গের রাজশক্তি হ্রস্ব হইয় পড়ে। তখন যদিও নামে উছারাই রাজ্যশাসনকর্তী হউন, কিন্তু বাস্তবিক কতকগুলি অাচ্য প্রজার হস্তেই রাজশক্তির অধিকাংশ সমপিত হয় । অনেকগুলি ইউরোপীয় "জাতি এবং আমেরিকাবাসী ইউরোপীয়ের এই অবস্থাপন্ন হইয়াছে। পৃথিবীর অন্য কোথাও এরূপ হইয়া উঠে নাই। কিন্তু ইউরোপেও অদ্যাপি প্রজাসাধারণের বিশেষ গৌরব হয় নাই। যাবৎ সকলেই জ্ঞানবান ও “ধনবান না হইবে, তাবৎকাল তাহা হওয়াও নিতান্ত অসম্ভব । ...
পাতা:বিবিধ প্রবন্ধ (ভূদেব মুখোপাধ্যায়) দ্বিতীয় ভাগ.djvu/২৬
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।