পাতা:বিবিধ প্রবন্ধ (ভূদেব মুখোপাধ্যায়) দ্বিতীয় ভাগ.djvu/২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দ্বিতীয় ভাগ । Sన মানব জাতির শাসন-প্রণালী সম্বন্ধে যাহা ; যাহা কথিত হইল, তদ্বারা অবশ্যই এইরূপ প্রতীতি হয় যে, যেমন মনুষ্যগণ শৈশবে স্ব স্ব পিতা মাতা ফর্তৃক প্রতিপালিত হয়, এবং ক্রমে বয়োধিক ও কার্যক্ষম হলে বন্ধুবৎ আচরিত হয়, মনুষ্যসমাজেও ঠিক সেইরূপ ঘটে । একান্ত বর্বর দশায় কুলপতি, রাজা, যাজক কিম্বা ভূম্যধিকারিবর্গ—ইষ্টারাই প্রজাসাধারণের শাসন করেন । কিন্তু প্ৰজাগণের জ্ঞানোন্নতি হইলে তাহারা ক্রমে ক্রমে স্বতন্ত্র হুইতে থাকে। ফলতঃ বুদ্ধিই বল । সমাজ মধ্যে যাহারা অধিক বিদ্যাবুদ্ধি-সম্পন্ন হইবেন, তাহাগিদের হস্তে অধিক রাজশক্তি সমপিত হইবে । এই নিয়মের কদাপি অন্যথা ঘটিতে পারে না । যখন যেখানে এই নিয়মের উল্লঙ্ঘন হইল্পাছে, সেই স্থানেই অতি ভয়ঙ্কর উপদ্রব ও রাষ্ট্রবিপ্লব ঘটিয়াছে। শাসন প্রণালীর ইতিবৃত্ত পৰ্য্যালোচনা করিতে করিতে আরও একট প্রাকৃতিক নিয়মের উপলব্ধি হইয়া থাকে । সকল সমাজেই পরস্পর-বিভিন্ন পরামর্শী কতিপয় দল থাকে। দেখ, রাজা ও রাজকৰ্ম্মচারিগণ এক দল, এবং যাজকের তাহাদিগের হইতে ভিন্ন ; আবার ভূম্যধিকারী কুলীনবর্গ পূৰ্ব্বোক্ত উভয় দল হইতেই স্বতন্ত্র ; আর আঢ্য প্রজাগণ ঐ তিন দল হইতেই পৃথক । পরষ্ঠ, ধ্রুজা সাধারণ ঐ চরি দলের কোন দলেরই সহিত সম্পূর্ণরূপে মিলিত হইতে পারে না । এই সকল দল কিয়ৎপরিমাণে পরস্পর বিভিন্ন মতাবলম্বী । ধৰ্ম্মপ্রণোদিত না হইলে সকলেই স্ব স্ব হুস্তে সমধিক রাজ-শক্তি গ্রহণের নিরন্তর চেষ্টা করে । তাহ করাতে সমাজের কৰ্ম্ম সুন্দররাপে নিৰ্ব্বাহিত হইতে পারে না—কেহই স্থায়িভাবে অতি প্রবল হইয়া অপর সকলের প্রতি অধিক অত্যাচার করিতে পারে না বটে, কিন্তু প্রকৃত প্রস্তাবে সমাজের হিতসাধন হয় না । এইরূপে ভাবিয়া দেখিলে মনুষ্যসমাজকে একটা তুলাদণ্ড স্বরূপ বোধ করা যায়। যেমন তুলাদণ্ডের এক এক দিকের ভার ঐ দণ্ডকে স্ব স্ব অভিমুখে নত করিবার চেষ্টা করে, তেমনি সমাজ-সভুক্ত প্রত্যেক দলই সমধিক শক্তি গ্রহণের চেষ্টা করিয়া উহাকে আপনাপন পক্ষপাতী ব্যবস্থায় আয়ত্ত করিতে চায় ; কিন্তু যেমন তুলাদণ্ডের অবলম্ব যথাযোগ্য স্থানে নিবেশিত থাকিলে দণ্ডের সাম্যাবস্থা থাকে, তেমনি যথোচিত ব্যবস্থা প্রণয়ন দ্বারা দ্যায়পরতার প্রাধান্ত সংরক্ষিত হইলেও সমাজের সাম্যাবস্থা পরিভ্রষ্ট হইতে পারে না । রাজনীতিজ্ঞ পণ্ডিতেরা এই নিয়মকে “সামাজিক