సిరి বিবিধ প্রবন্ধ । সাম্যাবস্থার নিয়ম” বলিয়া অভিহিত করিয়াছেন। ব্যবস্থাপক মাত্রেরই এই মৌলিকস্থত্রের প্রতি দৃষ্টি রাখিয়া ব্যবস্থা প্রচলিত করা কর্তব্য। যদি তাহা না করেন, তাহা হইলেই ব্যবস্থার দোষ হয় ; এবং সেই দোষে হয়ত সমাজ একবারে হীনবল হইয়া যায়, অথবা তদোষ সংশোধনার্থ পুনঃ পুনঃ রাষ্ট্রবিপ্লবাদি ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা ঘটিতে থাকে। যত দিন উক্ত দোষ সংশোধিত হইয়। পুনৰ্ব্বার স্থায়পরতার প্রাধান্ত সংস্থাপিত হইয়া সাম্যাবস্থা না হয়, তাবৎকাল সমাজের কৰ্ম্ম সুচারুরূপে সম্পন্ন হয় না । ব্যবস্থা-প্রণালী । যদি মনুষ্যমাত্রেই অস্বার্থপর, জিতেন্দ্রিয় ও ধৰ্ম্মপরায়ণ হইত, তবে সচ্ছন্দে সকলে সমাজবদ্ধ হইয়া সুখে কালযাপন করিতে পারিত। কেহ কাহার প্রতি কোন প্রকার অত্যাচার করিত না ; সুতরাং কোন প্রকার শাসনেরও আবখ্যকতা থাকিত না । যিনি বিদ্যা ও বয়সে শ্রেষ্ঠ হইতেন, সকলে তাহার মতানুযায়ী হইয়া সমাজের সাধারণ কৰ্ম্ম নিৰ্ব্বাহ করিত, আর নিজ নিজ কৰ্ম্ম সম্পাদনে কাহাকেও কোন প্রকার শাসনের অধীন থাকিতে হইত নৃ । কিন্তু মনুষ্যের প্রকৃতি তেমন বিশুদ্ধ নয় । ধৰ্ম্মশিক্ষিত না হইলে সকলেই আত্মম্ভরী হইয়া থাকে। শিশুদিগের স্বভাবে ইহা বিলক্ষণ অনুভূত হয় । তাহাদিগের মনে সদাশয়তার লক্ষণ সমস্তও যেমন দেখা যায়, একান্ত স্বার্থপরতার লক্ষণ সমস্তও তেমনি দৃষ্ট হইয়া থাকে। ইহাতেই ধৰ্ম্মশিক্ষা এবং শাসনের প্রয়োজন দেখা যাইতেছে। মনুষ্যসমাজের আদিমাবস্থায় যখন এক একটী পরিবারের লোকমাত্র একত্র সম্বন্ধ থাকে, তখন ঐ পরিবারের কৰ্ত্তা যেরূপ শাসন করেন, সকলে তাহারই বশবৰ্ত্তী হইয়া চলে । নিজ পরিবারের প্রতি র্তাহার যে নৈসর্গিক স্নেহ থাকে তদ্বারাই তাহার শাসন-বিধি পক্ষপাতশূন্ত এবং সকলের মুখাবহ হয়। ক্রমে পরিবার বৃদ্ধি হইয়া কুলতন্ত্রতার কাল উপস্থিত হইলে কুলপতিগণ স্ব স্ব ইচ্ছ। এবং জ্ঞান অনুসারে শাসন করিতে থাকেন। কিন্তু সেই সময় হইতেই এক প্রকার ব্যবস্থাও প্রচলিত হইতে আরম্ভ হয় । কোন বিশিষ্ট জ্ঞানসম্পন্ন কুলস্বামী যে প্রকারে স্থলবিশেষে বিচার করিয়া যান, তাহা সকল লোকের হৃদগত হইয়া থাকে। তাহার পর আবার সেই প্রকার স্থল উপস্থিত হইলে
পাতা:বিবিধ প্রবন্ধ (ভূদেব মুখোপাধ্যায়) দ্বিতীয় ভাগ.djvu/২৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।