পাতা:বিবিধ প্রবন্ধ (ভূদেব মুখোপাধ্যায়) দ্বিতীয় ভাগ.djvu/৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

委ぐ。 বিবিধ প্রবন্ধ । মিসরীয়দিগের হল্ম্য বিদ্যাও শিখে । কিন্তু উহারা আপনাদিগের সহৃদয়তাগুণে অল্পকালমধ্যেই ঐ শিল্পবিদ্যার এতাদৃশ উন্নতি করিল যে, মিসরে কখনই সেরূপ হয় নাই । প্রথমতঃ উহারা প্রাচীর সমস্তকে সমগৃষ্ঠ করিল, এবং স্তম্ভগুলির গাত্রের অন্ত খোদকতা পরিত্যাগ করিয়া কেবল সরল রেখাগুলি মাত্র রাখিল । উহারা স্তস্ত সকলকে প্রথমাবধি অপেক্ষাকৃত দীর্ঘ করিতেও আরম্ভ করিয়াছিল বটে, তথাপি আদৌ ব্যাস পরিমাণে চতুগুণের অধিক দীর্ঘ করে নাই । এইরূপ হল্ম্য-প্রণালীকে ‘ডেfরীর” কহিয়া থাকে। ইহার কিয়ৎকাল পরে গ্রীকেরা স্তম্ভ সকলের দৈর্ঘ্য ব্যাসপরিমাণের ৮৯ গুণ করিত, স্তম্ভের নীচে সমচতুরস্ৰ পীঠিকা গ্রথিত করিত এবং স্তম্ভের মস্তক ‘কান্‌মোচড়া করিত। এইরূপ করাতে হৰ্ম্ম্যের সৌন্দৰ্য্য যে অধিক হইবে, তাহার সন্দেহ কি ? ইহাকে “আইওনীয়” প্রথ) কহে । তৃতীয় প্রকার গ্রীক হৰ্ম্ম্যের স্তম্ভ সকল দৈর্ঘ্যে ব্যাসের দশ গুণ হইত । তাহাদিগের পীঠিকার গঠন বিচিত্র এবং শিরোভূষণ সপল্লবপাদপ-শিরোভাগের অনুরূপ হইত। এই প্রথাকে ‘করিন্থীয়’ কহা যায় । গ্ৰীকদিগের দেশ অতি রমণীয়। তথায় ঝড় বৃষ্টির উৎপাত প্রায়ই হয় না । তথায় সমস্ত বৎসরই যেন ঋতুরাজ বসন্ত বিরাজ করিতে থাকেন। এই হেতু অট্টালিকা সমস্তের দ্বার অতীব প্রশস্ত হইত, নাট্যশালা প্রভৃতি সাধারণ সমাগম গৃহের ছাদ থাকিত না, এবং দেবালয় সকলের চতুর্দিকেই অতি সুন্দর স্তম্ভশ্রেণী দৃষ্টি-গোচর হইত। অতএব ইহাদিগের হৰ্ম্ম্য সকল যে সমধিক শোভাসম্পন্ন হইবে, তাহা আশ্চৰ্য্য নহে । চমৎকারের বিষয় এই যে, গ্রীকজাতীয় লোকের মনের প্রকৃতি যখন যেরূপ হইয়াছিল, তাহদের তৎকাল নিৰ্ম্মিত হৰ্ম্ম্য সকলও সেই সেই প্রকার মনের ভাব প্রকাশক হইয়া আছে, দেখিতে পাওয়া যায়। অর্থাৎ যখন গ্ৰীকজাতির প্রথম অভু্যদয়কাল সুতরাং লোকমাত্রের মনে দৃঢ়তা, ঔদার্য্য এবং সারল্য গুণের আধিক্য, তখন হৰ্ম্ম্য সকল সুদৃঢ় ডোরায় প্রথায় বিনিৰ্ম্মিত হয় । যখন তাহারা প্রবল পারসীক জাতিকে সন্মুখ সংগ্রামে পরাভব করিয়া আপনাদের বলবিক্রম উত্তমরূপে অবগত হইল, এবং কাব্যরসের রসিক হইতে লাগিল, তখন শোভমান আইয়োনীয় প্রথায় উহাদিগের হৰ্ম্ম্যনিৰ্ম্মাণ হইতে লাগিল। পরে যখন তাহার চতুদিক জয় করিয়া সাতিশয় অর্থশালী এবং ইন্দ্রিয়পরায়ণ হইল, তখন নানা ঋলঙ্কারে বিভূষিত করাষ্ট্ৰীয় হৰ্ম্ম্য-প্রণালী তাহদের সমধিক আদরণীয়া হইল ।