లిe বিবিধ প্রবন্ধ। চর্চ বিস্তৃত হইতে থাকে। পদার্থতত্ত্বানুশীলন বিস্তৃত হইলেই নানা প্রকার বৈষয়িক কার্য্যে সুবিধান হইতে থাকে, এবং জনসাধারণ বিদ্যোৎসাহী হয় । যুদ্ধ-প্রণালী । : অতি পূৰ্ব্বকালাবধি মনুষ্যগণকে সংগ্রামে প্রবৃত্ত হইতে দেখা যায়। যতই প্রাচীন কালের ইতিবৃত্ত অনুসন্ধান করা যায়, ততই তাৎকালিক লোকদিগের বিগ্রহানুরাগ অধিক ছিল, এইরূপ বোধ হইতে থাকে। বস্তদশায় জীবিকোপার্জন করাই কঠিন । সুতরাং আপনার প্রয়োজনীয় কোন দ্রব্য অন্তের নিকট থাকিলে বৰ্ব্বরব্যক্তি যে তদধিকারীকে বিনাশ করিয়া সেই দ্রব্য লইবার চেষ্টা করিবে, ইহা সহজেই বোধ হইতে পারে। বন্তদশায় অনুক্ষণ সেইরূপ বিবাদ ঘটিবার সম্ভাবনা ছিল । আবার সে সময়ে শাসনের পারিপাট্য ছিল না ; দেশও বিস্তীর্ণ ছিল না ; সুতরাং জনে জনে, কুলে কুলে, সমাজে সমাজে, যদি একবার কোন কারণে দুই পক্ষে বিবাদ উপস্থিত হইত, তবে সেই বৈরিত। পুরুষানুক্রমিক ধারাবাহিক হইয়া চলিত । প্রায়ই এক পক্ষের সৰ্ব্বতোভাবে বিনাশ না হইলে উহার ক্ষান্তি হইত না। যখন রাজ-শাসন উত্তম না থাকে, তখন বৈরনিৰ্য্যাতন একট পরম ধৰ্ম্মের মধ্যে গণ্য হয়। বোধ হয়, জনগণ প্রথমে প্রস্তরাদি নিক্ষেপ দ্বারাই পশুবধ এবং পরম্পর যুদ্ধ করিত, তখন অন্ত অস্ত্রশস্ত্রাদির ব্যবহার ছিল না। ক্রমে লগুড়, কাষ্ঠময় বা শিলাময় দাত্র ধনুৰ্ব্বাণ প্রভৃতির ব্যবহার আরম্ভ হয় । তৎকালেই কঠিন পশুরচর্শ্বস্বারা শরীর আবৃত করাও আরম্ভ হইয়া থাকিবে। ক্রমে মনুষ্যসমাজের যেমন উন্নতি হইতে থাকে, যুদ্ধের উপকরণ সকলও তেমনি দিন দিন উৎকৰ্ষ লাভ করে। ভূম্যধিকার সম্পন্ন ধনশালী জনগণ বৰ্ম্মাদি শরীরত্রাণ প্রস্তুত করাইতে এবং যানবাহনাদি রাখিতে পারেন। সামান্য দুঃখী লোকেরা তাদৃশ অর্থ ব্যয়ে সমর্থ হয় না। যুদ্ধ সেই সময় হইতে একটা ব্যবসায়ের মধ্যে গণ্য হইয় উঠে। ভূম্যধিকারিগণ আর কোন কৰ্ম্মই করেন না। কেবল যাহাতে শরীরের বল বৃদ্ধি হয়, অস্ত্ৰ শস্ত্র ব্যবহারে বিশেষ নৈপুণ্য জন্মে, অশ্ব হস্তী রথাদিচালনে পটুত হয়, এই সকল শিক্ষাই তাহাদিগের বাল্যাবস্থার একমাত্র অবলম্বনীয় হইয়া থাকে। অতএব তাদৃশ রণদক্ষ ব্যক্তিরা যে এক একজনে নিরস্ত্রপ্রায়, অশিক্ষিত, দুৰ্ব্বল, শত শত সৈনিকের
পাতা:বিবিধ প্রবন্ধ (ভূদেব মুখোপাধ্যায়) দ্বিতীয় ভাগ.djvu/৩৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।