७२ বিবিধ প্রবন্ধ । পদাতিকের সমধিক গৌরব হইলে সমরপ্রণালীর আরও একট পরিবর্তম ঘটে । সকল রাজ্যেরই প্রথমাবস্থায় প্রজাগণ শান্তিকালে স্ব স্ব বৃত্তি অবলম্বন করিয়া থাকে, যুদ্ধকাল উপস্থিত হইলে শস্থধারী হইয়া রণস্থলে যায় । তৎকালে ভূম্যধিকারিগণ স্ব স্ব ভূম্যধিকার হইতে ঐ সকল সেনা লইয়া গিয়া রাজার সহায়তা করেন। কিন্তু রাজ্য বিস্তীর্ণ এবং ভূম্যধিকারিগণ খৰ্ব্বগৌরব হইলে আর এইরূপ থাকে না। তখন রাজ্য রক্ষার নিমিত্ত কতকগুলি ভূতিভূক্ সেনা নিযুক্ত করিয়া রাখিতে হয়। তাঙ্গর রাজকোষ হইতে ভূতি প্রাপ্ত হইয় একমাত্র যুদ্ধ ব্যবসায়ই অবলম্বন করিয়া থাকে। এক্ষণে ইউরোপের সৰ্ব্বত্রই এই প্রকায় হইয়াছে । অপরস্তু তথায় প্রজা সাধারণের মধ্যেও যুদ্ধ বিদ্যার শিক্ষা হইয়া থাকে । ইউরোপের এক একটী রাজ্য যেন এক একটা প্রকাণ্ড সৈনিকাবাস হইয়া উঠিতেছে। ইউরোপে এক্ষণে যুদ্ধবিদ্যা একটা প্রধান বিদ্যার মধ্যে পরিগণিত । পদার্থলিষ্ঠা, গণিত, রসায়নাদি বিবিধ শাস্ত্র, শস্ত্রবিদ্যার সহকারী হইয়াছে । কোন অসভ্য জাতির এমত সামর্থ নাই যে, নব্য ইউরোপীয়দিগকে পরাভূত করিতে পারে। কিন্তু যেমন বিদ্যাবাহুল্যপ্রযুক্ত এক্ষণে যুদ্ধের কৌশল বৃদ্ধি প্রাপ্ত হইয়াছে, তেমনি শাস্তিগুণেরও প্রাচুর্ভাব হওয়াতে যুদ্ধের অনেকানেক ভয়ঙ্কর দোষের পরিগর হইয়াছে। এক্ষণে ইউরোপীয়দিগের মধ্যে পরস্পর যুদ্ধের সময়ে বালক, বৃদ্ধ, বনিতাগণের প্রতি প্রায় অকারণে অত্যাচার করা হয় না—শত্রু শরণাপন্ন হইলে প্রায় তাহার প্রাণনাশ করা হয় না। কোন পরাজিতরাজ্যের প্রজাগণকে দাসত্ব শৃঙ্খলে বদ্ধ করা হয় না এবং কোন কোন সদাশয় ব্যক্তির মনে এমন ভাবোদয় ও হইয়াছে যে কোনরূপে যদি জাতীয় বিবাদ সমস্ত শালিসীর দ্বারা নিষ্পত্তি করিয়৷ একেবারে যুদ্ধ করা পরিত্যাগ করা যায়, তাহা হইলেই ভাল হয় । ধৰ্ম্মপ্রণালী । কাৰ্য্যকারণ সম্বন্ধ জ্ঞান মন্থম্বোর প্রকৃতি সিদ্ধ সংস্কারমূলক। কোন দেশে কোন কালে এমন কোন ব্যক্তি জন্মগ্রহণ করে নাই, যাহার মনে অতি শৈশবাবধিই এই জ্ঞানের অঙ্কুর দেখিতে না পাওয়া গিয়াছে। আর बहेि এমত কেহ থাকে, তবে তাহার তাদৃশ অবস্থা মানসিক পীড়ার মধ্যে গণ্য
পাতা:বিবিধ প্রবন্ধ (ভূদেব মুখোপাধ্যায়) দ্বিতীয় ভাগ.djvu/৪০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।