দ্বিতীয় ভাগ । ‘වA সমুদয় শ্ব স্ব বুদ্ধির অগম্য দেখিয়া তৎসমুদয়কে দেবতাজ্ঞানে পূজা করেন, কিন্তু জীবন পূৰ্ব্বোক্ত সৰ্ব্বাপেক্ষ অধিকতর চমৎকারজনক। জীবন কি ? কেহই এই প্রশ্নের সমগ্র উত্তর প্রদানে সমর্থ নহেন । অতএব সৰ্ব্বস্থলেই জড়োপাসনার সঙ্গে সঙ্গেই প্রাণী-উপাসনারও আরম্ভ হইয়া থাকে । তখন যত প্রকার পশু, পক্ষী, কীট, পতঙ্গ, দৃষ্ট হয় সকলেতেই কোন গুহ দেব-শক্তি বর্তমান আছে এমত প্রতীত হয়। বিশেষতঃ যে সকল জীব মকুন্যের অধিক হিতকারী, অথবা বিশিষ্ট শক্তিসম্পন্ন তাহাদিগের উপাসনায় সমধিক গৌরব হয় । এইরূপ প্রাণিপূজা এবং পূৰ্ব্বোক্ত জ্যোতিষ্কপূজা, উভয়পূজা কিছুকাল একত্রিত হইলেই উপাসনার আর একটা লুভন প্রণালী জন্মে। যে সকল ব্যক্তি সমধিক পরাক্রম প্রকাশ করিয়া শত্র জয় করেন, অথবা প্রয়োজনোপযোগী শিল্প নিৰ্ম্মাণ কমেন, র্তাহারা জনসাধারণের কৃতজ্ঞতাভাজন হইয়া দেবতা বলিয়া পূজ্য হন। এইরূপে মনুষ্যোপাসনা আৰম্ভ হয় । কিন্তু ইহার সহিত পূৰ্ব্ব প্রণালীর সংযোগ রাখা আবশ্যক। এই হেতু প্রথম প্রথম ষে সকল মনুষ্য দেবতা বলিয়া পুজিত হন, তাহারা প্রায়ই জ্যোতিষ্কদিগের নামে অভিহিত হইয়া থাকেন । ইহাও সাকার উপাসনা বটে কিন্তু ইহার বিষয়ীভূত যে সকল পদার্থ তাহারা চিজড়াত্মক, কেবল জড়মাত্র নহে। অতএব ইহা চিন্ময় ব্রহ্মোপাসনার তৃতীয় সোপান বলিয়া গণ্য হইতে পারে। মনুষ্যোপাসনার আরম্ভ হইয়া সভ্যাবস্থার উন্নতি হইলে যখন শক্রজয় এবং শিল্পনিৰ্ম্মাণ মাত্র মকুষ্যের প্রয়োজনীয় থাকে না, সৰ্ব্বাপেক্ষণ ধৰ্ম্মোপদেশই সমধিক আবশুক বোধ হয়, তখন যে সকল মহাত্মা কৰ্ত্তব্যাকৰ্ত্তব্য জ্ঞানের উপদেশ করেন র্তাহাদিগকে এই সকলের অপেক্ষাই বড় বলিয়া বোধ হয় । জল, বায়ু, বহ্নি অতি আশ্চৰ্য্য পদার্থ, জ্যোতিষ্কগণ তদপেক্ষাও অধিক চমৎকারজনক, জীবন আরও রহস্ত বস্তু, বৈষয়িক সুখ দুঃখের ব্যাপার সকলের চিত্তাকর্ষক, কিন্তু কৰ্ত্তব্যাকৰ্ত্তব্য জ্ঞান যেমন অতীব গুহ এবং বিষ্ময়জনক এমত আর কিছুই নাই ! অতএব যাহারা মূৰ্ত্তিমৎ জ্ঞানস্বরূপ র্তাহারা যে নরগণের অবশু পূজ্য হইবেন, তাহার আর সন্দেহ কি ? তাহার চিন্ময় ঈশ্বরের অবতার বলিয়া প্রসিদ্ধ হয়েন । এই অবস্থায় যে ধৰ্ম্মপ্রণালী প্রচলিত হয় তাহার নাম অবতারোপাসনা । অবতার উপাসনা আরম্ভ হইলে মনুষ্যদিগের দিন দিন ধৰ্ম্মবৃদ্ধির উপায় হয় । কারণ উক্ত অবতারের নর
পাতা:বিবিধ প্রবন্ধ (ভূদেব মুখোপাধ্যায়) দ্বিতীয় ভাগ.djvu/৪৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।