Sుల বিবিধ প্রবন্ধ { জাতির সমীপে চিন্ময় ঈশ্বরের প্রতিরূপস্বরূপে পরিচিত হয়েন ; এবং ঐ আদর্শ প্রাপ্ত হইয় জনগণ ধৰ্ম্মপথের পথিক হইতে পারে। - মনুষ্যের মন কাৰ্য্য কারণ সম্বন্ধে আরও সূক্ষ্মদর্শনক্ষম হইলে উহাতে ক্রমশঃ দ্বৈতভাবের হ্রাস হইয়া অদ্বৈতবাদ গ্রহণে উন্মুখত জন্মিতে থাকে। অদ্বৈতবাদী ভক্তিপরিসিক্তহৃদয়ে জড়জগৎকেও সেই একমাত্র অদ্ভূতময় শক্তি হইতে অভিন্ন দেখিতে চেষ্টা করেন এবং প্রকৃত জ্ঞানলাভ হইলে সেই চিন্ময় পরমেশ্বরকে আপনাতেই দেখিতে পান । এই বিষয়োপলক্ষে আরও একটী কথা বক্তব্য আছে । ধৰ্ম্মপ্রণালীর পরিবর্তন হইলে কোথাও পূৰ্ব্বপ্রথা একেবারে অপ্রচলিত হইয়া যায় না । পূৰ্ব্ব ধৰ্ম্মের সঙ্গিত পর ধৰ্ম্মটর সংযোগ হইয়া কিছুকাল দুইই এক সময়ে চলিতে থাকে। ক্রমে দ্বিতীয়টার প্রতি বিশেষ মনোযোগ হয়, প্রথমটী তাদৃশ প্রবল থাকে না । যেমন বালকদিগকে প্রথমে বর্ণমালা পড়াইতে হয়, তাহার পর তাহারা বানান ফল প্রভৃতি শিখে, কিন্তু সেইগুলি শিখিবার সময় যে বর্ণমালা ভুলিয়া যায় এমত নহে, বস্তুতঃ ঐ বর্ণমালা শিক্ষা হইয়াছে বলিয়াই তাহারা অপরগুলি শিথিতে পারে । ধৰ্ম্মশিক্ষাতেও ঠিক সেইরূপ ঘটে । জড়োপাসনার পর জ্যোতিষ্কমণ্ডলীর উপাসনা আরম্ভ হয়, পরস্তু তৎকালে জড়োপাসনাও একেবারে পরিত্যক্ত হয় না। প্রত্যুত জড়োপাসনাধীন উপাসনায় ষেরূপ সমস্ত বিধির শিক্ষণ হইয়াছে, জ্যোতিষ্ক উপাসনায় সেই সকল বিধিই প্রচলিত হয়। এইরূপ সৰ্ব্বত্র ঘটয়া থাকে। _ মনুয্যের পূর্বাপর অবস্থা সম্বন্ধে মতভেদ । মনুষ্যজাতির ইতিবৃত্ত বিষয়ে প্রাচীন এবং নব্য পণ্ডিতদিগের মধ্যে একটা বিশেষ মতভেদ আছে। প্রাচীন পণ্ডিতেরা অনেকেই বলিয়া গিয়াছেন যে, মনুষ্য জাতির অবস্থা পূৰ্ব্বে ভাল ছিল, ক্রমে কালসহকারে সেই অবস্থা নিরু৯ হইয়া পড়িয়াছে। নব্য পণ্ডিতেরা এই মতের প্রতি আস্থা প্রদর্শন করেন না । ইহঁারা বলেন, মনুষ্য আদিমাবস্থায় কি ধৰ্ম্মজ্ঞানে, কি সমাজ-বন্ধনে, কি উপভোগ্য-সাধনে সকল বিষয়েই অতি হীনদশাপন্ন থাকে, ক্রমে অতি সুদীর্থকালে নানা বৈষম্য উত্তীর্ণ হইয়া অল্পে অল্পে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতঃ সকল বিষয়েই উন্নতিলাভ করে। যেমন শিশুদিগের কোন জ্ঞান এবং কোন
পাতা:বিবিধ প্রবন্ধ (ভূদেব মুখোপাধ্যায়) দ্বিতীয় ভাগ.djvu/৪৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।