পাতা:বিবিধ প্রবন্ধ (ভূদেব মুখোপাধ্যায়) দ্বিতীয় ভাগ.djvu/৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দ্বিতীয় ভাগ । 8% কাঠদহনজাভ অঙ্গরাদিরূপ অগ্নি ব্যবহারের চিহ্ন সকল দেখিতে পাওয়া গিয়াছে। সুতরাং মনুষ্ণেরা যে সময়ে অগ্নির ব্যবহার জানিত না, সে সময়ের কোন চিহ্নই এক্ষণে বিদ্যমান নাই। সে সময়ে নরগণ নিতান্ত পশুভাবাপন্নই ছিল । কিন্তু অগ্নির প্রয়োজন এত অধিক, উহা প্রাপ্ত হইবার উপায়ও এত অধিক এবং উহার ব্যবহার করিতে পারিলে এত বিঘ্ন বিপত্তির নিবারণ এবং কার্য্যের সুবিধা হয় যে, মনুষের বুদ্ধি শক্তির প্রথম উন্মেষ মাত্রেই ষে অগ্নির ব্যবহার প্রবর্তিত হইয়াছিল, সে দিয়য়ে সন্দেহ নাই । কিন্তু প্রথমে মনুষ্যেরা স্বইচ্ছাতঃ অগ্নি প্রজলিত কৱিবার কোন উপায়ই আবিস্কৃত করিতে পারে নাই। এই জন্ত তাহারা অতি যত্নপূর্বকং " " শিত, পরে কাঠে কাঠে ঘষিয়া অগ্নি উৎপাদন করিবার উপায় উদ্ভাবিত হয় । ৩i - , অরণিযন্ত্রের সৃষ্টি হয় এবং ক্রমশঃ উহার উৎকর্য সাধিত হওয়ায় অগ্নি উৎপা. দনের পরিশ্রম লঘু হইয়া আইসে। তাহার পর লৌহ এবং প্রস্তরের পরস্পর iংঘাতে অগ্নি উৎপাদনের রীতি প্রবৰ্ত্তিত হইয়া গেলে অরণি যন্ত্রের ব্যবহার সাধারণতঃ পরিত্যক্ত হয়। পরে লুসিফর শলাকা উদ্ভাবিত হইয়া চকুমকির স্থান গ্রহণ করে এবং চকুমকির ব্যবহার প্রায় উঠিয়া যায়। অগ্নির ব্যবহার অবগত হইলেই ইতর জন্তু হইতে মন্থয্যের পার্থক্য বিশিষ্টরূপে লক্ষিত হইতে থাকে। ইতর হিংস্র জন্তু মাত্রেই অগ্নিকে ভয় করে এবং যেখানে অগ্নি প্রজলিত হইতেছে দেখিতে পায়, সে স্থান হইতে দুরে পলায়ন করে । সুতরাং অগ্নির ব্যবহারের আরম্ভ মাত্রেই মকুষ্যের আবাস গুলি অনেকটা ভয় এবং বিঘ্নশূন্ত হইয় উঠে। প্রস্তরযুগে মনুষ্যদিগের অস্ত্ৰ শস্ত্রাদি ভাল থাকে না । অগ্নির ব্যবহার শিপিয়া মনুষ্যেরা অগ্নি দ্বারাই উৎকৃষ্ট অস্ত্রাদির অনেক কাৰ্য্য সাধন করিতে পারে। বড় বড় কাঠ কাটিয়৷ তাহার অন্তর্ভাগ খুদিয়া ডোঙ্গ প্রস্তুত করা অগ্নির সাহায্যে অল্পায়াস এবং অল্পকাল সাধ্য হইয়া যায়। তাম্রাদি ধাতু হইতে যে সমস্ত প্রয়োজনীয় অস্ত্র, যন্ত্র এবং পাত্ৰাদি নিৰ্ম্মিত হয়, অগ্নির দ্বারা ঐ সকল ধাতুকে গলাইয় তাহ সুসম্পাদিত হইয় থাকে । আর আম মাংস মৎস্যাদি ভক্ষণ করিবার মে রীতি প্রচলিত থাকায় মনুষ্যের বুদ্ধি এবং ধৰ্ম্ম প্রবৃত্তির ফুৰ্ত্তি হইতে পাছত ন, অগ্নির ব্যবহার অারন্ধ হইলে সেই রীতি ক্রমশঃ রহিত হইয়া যায় এবং