দ্বিতীয় ভাগ । 8ኖ কিছুকাল এইরূপ চলিলে এবং শব্দের উচ্চারণ অভ্যস্ত হইয়া ক্রমশঃ পরিস্ফুট হইয়া উঠিলে, দ্রব্যবোধক ইঙ্গিতে এবং সেই ইঙ্গিতের চিত্রে এবং তদ্বোধক শব্দে একটী অতি ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধ দাড়াইয়া যায়। অর্থাৎ চিত্রগুলি যেমন দ্রব্যের তেমনি শব্দেরও পরিচায়ক হইয়া উঠে । চিত্র সাক্ষাৎসম্বন্ধে যেমন দ্রব্যের পরিচায়ক, তেমমি সেই দ্রব্যবোধক শব্দেরও পরিচায়ক হইলে, ক্রমে ক্রমে চিত্রের অঙ্গভঙ্গ হইয়া তাহার সংক্ষেপসাধন হইতে থাকে। প্রথমে এক একটা চিত্রাংশ এক একটী পূর্ণাবয়ব পদকেই বুঝায়, পরে ঐ চিত্রাংশ খৰ্ব্ব হইয়া যায়, এবং পদাংশকে বুঝাইতে । আরম্ভ করে এবং পরিশেষে চিত্রাংশগুলি আরও ভগ্ন এবং ক্ষুদ্র হইয়া এক একটা বর্ণমাত্রকে বুঝায় । - লিপিকার্যের স্বষ্টি এইরূপে অল্পে অল্পে হইয়াছে । উত্তর আমেরিকার ইণ্ডিয়ানেরা চিত্রলিপি পর্য্যন্তই করিতে পারিত—দক্ষিণ আমেরিকার পেরু এবং মেক্সিকো দেশনিবাসী লোকেরা চিত্রলিপি এবং শব্দলিপি দুই প্রকার লিপিকাৰ্য্যই সম্পন্ন করিতে পারিত। উহার কেহই বর্ণলিপি করিবার রীতি উদ্ভাবিত করিতে সমর্থ হয় নাই । ঐ সামর্থ্য প্রাচীন মিসরীয়দিগের মধ্যে উদ্ভূত হইয়াছিল। মিসরীয় যাজকেরা চিত্রলিপি, শব্দলিপি এবং বর্ণলিপি—এই তিনপ্রকার লিপিকার্য্যই নিৰ্ব্বাহ করিতে পারিতেন । তাহাদিগের আবিষ্কৃত বর্ণমালা য়িহুদী এবং ফিনিকীয়ের প্রাপ্ত হয় এবং বর্ণলিপিজ্ঞান ক্রমশঃ ইউরোপের সর্বত্র এবং অন্তান্ত খণ্ডেও প্রচারিত হইয়া পড়ে । ভারতবর্ষ, তিববত এবং ব্ৰহ্মদেশ প্রভৃতিতে যে সৰ্ব্বোৎকৃষ্ট বর্ণলিপিজ্ঞান বিস্তৃত হইয়াছে, মিসরীয় বর্ণলিপি তাহার মূল বলিয়া বোধ হয় না। যদিও বর্ণলিপিজ্ঞানের উদ্ভাবন প্রণালী একই, তথাপি অনুমান হয় যে, তাহার কোন স্বতন্ত্র ঐতিহাসিক মূল থাকিবে। কিন্তু সে বিষয়ে এ পর্য্যন্ত তেমন কোন অনুসন্ধান হয় নাই । সাংখ্যালিপির পর্য্যায়ক্রম । চিত্ররূপ লিপি, সকল বিষয়েই খাটে । কোন ঘটনাবলীর পৌৰ্ব্বাপৰ্য্য নির্দেশ করিতে হইলে, তাহ চিত্রলিপি খানির পূর্বাপর ভাগের অনুক্রমে :চিত্রিত করিলেই হয় । কোন বস্তুর সংজ্ঞা নির্দেশ করিয়া দেওয়া তাহার
পাতা:বিবিধ প্রবন্ধ (ভূদেব মুখোপাধ্যায়) দ্বিতীয় ভাগ.djvu/৫৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।