莎 বিবিধ প্রবন্ধ । - অপেক্ষীও সহজ বলিয়া বোধ হয় । বস্থট চিত্রিত করিয়া তাহার উপরিভাগে তাহার সংখ্যাবোধক দাড়ি দিয়া দিলেই চলিতে পারে। কিন্তু নরগণ বস্তুর সংখ্যা বুঝাইবার নিমিত্ত প্রথমে ঐ প্রণালী অবলম্বন করে নাই। তাহারা প্রথমতঃ দড়িতে গাইট স্বাধিয়া সংখ্যা বুঝাইত। এই ব্যাপার কোন কোন দেশে (১) এতদূর বিস্তৃত হইয়াছিল যে, রাজকোষের খাজনা, তহবিলের হিসাব এবং আদমসুমারীর হিসাব পর্য্যন্ত দড়ির গাইটেই রাখা হইত ! ঐ দড়ি কখন কখন চারি শত হাত লম্বা এবং অনেকানেক শাখা প্রশাখাযুক্ত হইত; এবং গাইট গুলিও বিভিন্ন রূপের এবং বিভিন্ন তাৎপর্য্যের হইত। ইহাও এক প্রকার লিপিকাৰ্য্য এবং ইহার মূল সংখ্যাবিষয়ক জ্ঞান। কিন্তু সংখ্যাবিষয়ক জ্ঞান সুপরিস্ফুট হইতে অনেক কাল লাগিয়াছিল। অদ্যাপি এমন দুই চারিট বৰ্ব্বর জাতি আছে, যাহারা পাচের অধিক গণনা করিতে পারে না । অর্থাৎ তাহারা ছয় বা সাত বলিতে হইলে, পাচ আর এক, পাচ আর দুই, এইরূপ বলিয়া থাকে । কোন কোন পৰ্য্যাটক বলিয়াছেন যে, এমন ও বর্বরভাষা আছে যাহাতে এক আর দুই সংখ্যার নাম ভিন্ন আর কোন সংখ্যার নাম নাই। কিন্তু আবার কোন কোন অসভ্য জাতি এক হইতে কুড়ি পর্য্যন্ত গণনা করিম তাহার পর এক কুড়ি আর এক, এইরূপে গণনা করিত। ফল কথা, সৰ্ব্বাদেী নরগণ মনোগত ভাব প্রকাশের নিমিত্ত অপরাপর স্থলে যেমন করিয়াছিলেন, তেমনি সংখ্যা বুঝিবার এবং বুঝাইবার নিমিত্ত ও সৰ্ব্বপ্রথমে ইঙ্গিতব্যঞ্জনার আশ্রয় লইয়াছিল, অর্থাৎ আঙ্গুলপাজি করিরাই আপনার ংখ্যার অবধারণা করিত এবং আঙল দেখাইয়াই সংখ্যার পরিমাণ অন্তকে বুঝাইত । এক হাতে পাঁচটী অঙ্গুলি—এই জন্ত অনেক জাতি অনায়াসেই পাচ পর্যন্ত সংখ্যার স্বতন্ত্র স্বতন্ত্র নামকরণ করিয়া সংখ্যাগুলিকে অঙ্গুলি প্রদর্শনের অনুকরণপূর্বক চিত্রিত করিত । এই ব্যাপারের উৎকৃষ্ট উদাহরণ রোমান সংখ্যালিপিতে প্রাপ্ত হওয়া যায়—যথা, এক কুই তিন চারি পাচ I II III IV V এস্থলে স্পষ্টই দৃষ্ট হইতেছে যে, এক, দুই, এবং তিন, এই তিনট সংখ্যা ক্রমান্বয়ে হস্তের এক, দুই এবং তিন অঙ্গুলি প্রদর্শনের অনুরূপ। পাচ সংখ্যা ( ১ ) পেরু ও মেক্সিকোয় দড়ির শাখা প্রশাখা প্রভৃতির দ্বারা বিভিন্ন প্রদেশ ও গ্রামাদি বুঝাইত । --
পাতা:বিবিধ প্রবন্ধ (ভূদেব মুখোপাধ্যায়) দ্বিতীয় ভাগ.djvu/৫৬
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।