দ্বিতীয় ভাগ } 88 দেখাইতে একটা কৌশল প্রকাশিত হইয়াছিল। বোধ হয়, এক হন্তের বৃদ্ধাঙ্গুলি এবং কনিষ্ঠাগুলি এই দুইটা মাত্র অঙ্গুলিকে বিস্তৃত ভাবে রাখিয়া এবং মধ্যের তিনটকে মুড়ির রাখিয়া পাঁচ সংখ্যা প্রকাশিত হইয়াছিল । চারি সংখ্যাটী যেরূপে প্রদর্শিত হইয়াছে, তাহাতে অপর একটী কৌশল আছে। চারি সংখ্যা যে পাঁচ হইতে এক কম উহা সেই ভাবে প্রকাশিত। পাচের পরবর্তী সংখ্যালিপিতেও ঐ প্রকার ইঙ্গিতচিত্রের এবং কৌশলের লক্ষণ আছে। যথা— ছয় সাত আট নয় দশ VI VII VIII IX X এস্থলে দৃষ্ট হইতেছে যে, এক হাতে পাচ দেখাইয় তাহার দক্ষিণে অপর হস্তের একট, দুইট এবং তিনটা অঙ্গুলির যোগে ক্রমান্বয়ে ছয় সাত আট সংখ্যা পর্য্যন্ত প্রদর্শিত হইত। দুইটী হস্তের মণিবন্ধে মণিবন্ধে তিৰ্য্যগৃভাবে সংযুক্ত করিয়া একবারে উভয়েই পাচ দেখাইলে যেরূপ হয়, তাহার চিত্র দশ ংখ্যার জ্ঞাপক এবং তাহা হইতে এক বাদ দিয়া নয় সংখ্যা প্রদর্শিত হইয়াছে। রোমান সংখ্যালিপির পরীক্ষাদ্বারা, কিরূপে যে ইঙ্গিতচিত্র হইতেই সংখ্যার লিপি সাধিত হইয়াছে, তাহ এক প্রকার বুঝিতে পারা যায়। কিন্তু সংখ্যার নামকরণ কিরূপে হইয়াছে, তাহা নির্ণয় করা অতি কঠিন । পণ্ডিতেরা অনেক বিচার করিয়া এই পৰ্য্যন্ত স্থির করিয়াছেন যে, মানবগণ কোন দৃষ্ট পদার্থের নাম হটতেই এক একট সংখ্যার নামকরণ করিয়াছিল। ক্রমে পুনঃ পুনঃ কথনাধীন সংখ্যাবাচক নামগুলির এত অপভ্রংশ ঘটিয়া গিয়াছে যে, তাহাদের মূল আর অনুসন্ধান করিয়া পাওয়া যায় না । ভারতবাসীদিগের সংখ্যালিপির পর্য্যায়ক্রম নির্দেশ করা অতি দুরূহ ব্যাপার। আর্য্যজাতীয় লোকেরা এত বহুপুৰ্ব্বকাল হইতে সংখ্যা সম্বন্ধে সুপরিস্ফুট জ্ঞান লাভ করিয়াছিলেন এবং গণনা কাৰ্য্যে এত পটুতা লাভ করিয়াছিলেন যে, এ বিষয়ে তাহাদিগের আদিম অবস্থার চিত্ন সমুদয় বিলুপ্ত হইয়া গিয়াছে—কৌশলের উপর কৌশল পড়িয়া যে মুল হইতে যাহ উদ্ভাবিত হইয়াছিল, তাহা একেবারে চাপা পড়িয়া গিয়াছে। ভারতবর্ষীয়েরাই দশোত্তর গণনার স্বষ্টি করেন, এবং তাহাদিগের স্থানে ই পৃথিবীর অন্য সকল সুসভ্যজাতি ঐ গণনারীতির জ্ঞানলাভ করিয়াছে। কিন্তু দশোত্তর গণনা
পাতা:বিবিধ প্রবন্ধ (ভূদেব মুখোপাধ্যায়) দ্বিতীয় ভাগ.djvu/৫৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।