ം বিবিধ প্রবন্ধ । প্রণালী যতই উৎকৃষ্ট হউক, উহা যে মানুষের দশটা অঙ্গুলি থাকাতেই জন্মিয়াছে ; সুতরাং ইঙ্গিত চিত্রের অনুকরণেই ক্রমশঃ উদ্ভাবিত হইয়াছে, তাহার সন্দেহ নাই। যদি আর্য্যের বা অপর কেহ নিরপেক্ষ বিচারমাত্রকে মূল করিয়া গণনার রীতি অবধারিত করিতে পারিতেন, তবে উহা দশোত্তর না হইয় তাহ অপেক্ষ সৰ্ব্বাংশে উৎকৃষ্টতর যে দ্বাদশোত্তর গণনার রীতি, সেই রীতি ক্ৰমেষ্ট হইত। কোন অতিমানুষ শক্তিদ্বারা গণনার রীতি উদ্ভাবিত হইলেও সেইরূপ.ইইত, আর ময়ূন্যের দুই হাতের আঙ্গুল যদি দশট না হইয়া বারটা হইত, তাহ হইলেও সেইরূপ হইত। মুদ্রাদি প্রচলনের পর্য্যায়ক্রম । ভাষ এবং লিপি-কাৰ্য্যাদির আদ্যারম্ভ নির্দেশ করা যেমন দুরূহ ব্যাপার, মুদ্রাদি ব্যবহারের প্রবর্তন এবং তাহার ক্রমোন্নতি নিরূপণ করা তেমন কঠিন কাৰ্য্য নহে । যখন দুই চারিট মনুষ্য-পরিবার পরস্পর সন্নিহিত ভূগর্ভে অথবা বৃক্ষশাখায় বাস করিয়াছে, তখন হইতেই সমাজের স্বষ্টি এবং অস্তোষ্ঠের সহিত দ্রব্যের বিনিময় আরম্ভ হইয়াছে । যে পরিবারের কোন বস্তুর অভাব বোধ হইয়াছে, সে পরিবার অপর পরিবারের স্থানে বস্তুটী পাইবার নিমিত্ত আপনাদের অর্জিত অপর কোন বস্তু প্রদান করিতে চাহিয়াছে, এবং যদি এই বস্তুটী ঐ দ্বিতীয় পরিবারের প্রয়োজনীয় হইয়া থাকে, তবে উভয়ের মধ্যে আদান প্রদান সহজেই সম্পন্ন হুইয়া গিয়াছে । কিন্তু অনেক স্থলে ঠিক এরূপ ঘটিয় উঠে না। অর্থাৎ যাহা একটা পরিবারের নাই, তাহাই অন্ত পরিবারের মধ্যে অধিক পরিমাণে অাছে, অথবা এরূপ পরিবার যাহা চায়, তাহাই অপরটার স্থানে আছে, এরূপ সৰ্ব্বদা ঘটেনা। স্বতরাং ক্রমে ক্রমে সকল পরিবারের লোকেই স্কোপার্জিত অনেকগুলি ভিন্ন ভিন্ন দ্রব্যের সঞ্চয় করিতে আরম্ভ করে । তাহা করিতে আরম্ভ করিলেই বিনিময়ের বিশেষ সৌকর্য্যসাধন হইতে থাকে। পাচ সাতটা ভিন্ন ভিন্ন দ্রব্যের সঞ্চয় করিয়া তদ্বারা বিনিময় সাধন করিতে করিতে দৃষ্ট হয় যে, যে দ্রব্যট যে জাতীয়ের প্রধান উপজীব্য, বিনিময় কালে তাহাই সমধিক কার্য্যে আইয়ে। মৃগয়ালু জাতীয়েরা দেখিতে পায় যে, পশুচৰ্ম্মের দ্বারাই তাহাদিগের অধিক বিনিময় সম্পন্ন হয় ; জালজীবী জাতীয়েরা দেখিতে পায় যে, মৎস্তই
পাতা:বিবিধ প্রবন্ধ (ভূদেব মুখোপাধ্যায়) দ্বিতীয় ভাগ.djvu/৫৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।