দ্বিতীয় ভুগি । T Ez a বসিয়াছিল। কিন্তু আদালতে একটাও নালিস রুজু হয় নাই। স্বতরাং আদালতটা উঠাষ্টয়া দেওয়া হইয়াছিল । পুলিসের একটী থানা আছে বটে, কিন্তু পুলিসকেও বড় কিছু করিতে হয় না। আমি ঐ কথা বলিয়া আরও বলিলাম “দেশের সর্বত্র যদি ঐরুপ হয়, তবে বড়ই ভাল হয় ।” সেক্রেটারী সাহেৰ ঐ কথায় রাগ করিলেন না । বলিলেন, “ওরূপ হওয়া প্রার্থনীয় বই কি—কিন্তু জমিদারের কি সুবিচার করেন বলিয়া তোমার বোধ হয়— উছারা কি পক্ষপাত করেন না—উছারা কি ব্রাহ্মণ অপরাধীর প্রতি অকাতরে দও প্রয়োগ করিতে পারেন ?” আমি বলিলাম, আমার বোধ হয় পারেন, আর যদি নাই পারেন তাহাতে দোষ কি ? দণ্ডদানের মূল যাহাই হউক, সমাজ যাহার পক্ষে যে দণ্ড উচিত মনে করে, তাহাই কি প্রকৃত দ গু নয় ? অন্তরূপ হইলে সাধারণতঃ বিচারের উপরে অভক্তি ও দণ্ডিত ব্যক্তির প্রতিই কি সমাজের সহানুভূতি জন্মে না ? গবর্ণমেণ্টের আদালতে ব্রাহ্মণ চণ্ডালনিৰ্ব্বিশেষে শারীর দণ্ড প্রয়োগ হয় । কিন্তু হিন্দুসমাজ ব্রাহ্মণের শারীর দগু অতি অযুক্ত বলিয়াই ভাবে। এমন স্থলে ব্রাহ্মণের প্রতি শারীর দণ্ড প্রয়োগে কি কোন শুভ ফলোৎপত্তি হইতে পারে ? সেক্রেটরী সাহেব ওসকল কথা আর গায়ে মাখিলেন মা। বলিলেন, “যাহাদিগের হস্তে ধৰ্ম্মাধিকরণ শক্তি স্বতঃই পড়িয়া আছে, তাহাদিগকে অবৈতনিক ম্যাজিষ্ট্রেট করাই ভাল । আমি বলিলাম, অবৈতনিক ম্যাজিষ্ট্রেটের স্বষ্টিতে ঐ সকল লোকের হাত হইতে প্রকৃত ধৰ্ম্মাধিকরণ শক্তি বাহির হইয়। যাইবে ; আপনাদের নিয়মান্থযায়ী বিচারে এবং আপনাদের পর্য্যবেক্ষিত কার্য্যে আর কোন স্বাধীনতাই থাকিবে না। বিচার কার্য্যটা কেবল “কাগুজে বিচার” হইয়া উঠিবে । চুরির মালও আদায় হইবে না, ধtহার মাল সেও তাহা পাইবে না, জরিমানার হার বৰ্দ্ধিত হইবে এবং লোকের দুঃখ বাড়িবে।” সেক্রেটারী সাহেব একটু হাসিলেন মাত্র । দুই মাসের মধ্যেই গেজেটে দেখিলাম ঐ জমিদারের দেওয়ান অবৈতনিক ম্যাজিষ্ট্রেট হইয়াছেন । ঘোলে দুগ্ধের স্বাদ থাকে না । অবৈতনিক ম্যাজিষ্ট্রেটদিগের বিচার প্রণালীতে সামাজিক অন্তঃশাসনের সমস্ত শুভ ফল ফলিতে পারে না । হিন্দু সমাজের অনেকটা অন্তঃশাসন জাতি বা সম্প্রদায়ের দ্বারা নির্বাহি শু হইয়া থাকে। স্থল তঃ এই শাসনের বিষয় এমন সকল পাপাচরণ যাহা রাঙ্গদণ্ডের অন্ততুত নহে । b
পাতা:বিবিধ প্রবন্ধ (ভূদেব মুখোপাধ্যায়) দ্বিতীয় ভাগ.djvu/৬৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।