দ্বিতীয় ভাগ । ○を এইরূপ নিয়ম আছে?” “প্রায় সকল ভাল ভাল ঘরেই আছে । লাল৷ মুসলমানেরা এবং ক্ষত্রিয় মুসলমানের প্রায়ই স্ব স্ব ঘর বাছিয়া বিবাহ করেজাঠ টাঠের তাহ বড় একটা করে না” । বাঙ্গালায় বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের মধ্যেও যে কতকটা ঐরূপে জাতি বিচার করিয়া বিবাহের ব্যবস্থা চলে তাহ! যিনি অনুসন্ধান করিবেন তিনিই জানিতে পরিবেন । আর কত খৃষ্টানদিগের মধ্যেও যে ওরূপ বিচার একেবারে নাই তাহাও নয়। এই সকল স্থলে জাতি-ভেদ দেখা দেয় কেন ? উহার প্রকৃত কারণ এই যে, ভারতবাসীদিগের মধ্যে রূপ গুণের প্রভেদ অনন্তজাতিসাধারণ । জাতিভেদের প্রকৃত অর্থ বৈবাহিক সম্বন্ধের পার্থক্য মাত্র, ভোজনাদিতে যে ভেদ করা হইয়াছে তাহার মুখ্য উদ্দেশু বৈবাহিক পার্থক্য বজায় রাখা । যদি ভারতবাসীদিগের মধ্যে রূপ গুণের যত পার্থক্য এখনও লক্ষিত হয় তাহ অপেক্ষ অনেক নুনি হইয়া যায়, তবে অবগুই জাতিভেদ প্রথা তিরোহিত হইবে। এখনও লোকের মুখে শুনা যায়—“কায়েত বামুনের চেহারা !” অর্থাৎ অপরাপর জাতীয়দিগের অপেক্ষ ঐ দুই জাতীয়ের সৌন্দর্য্য এবং ঐ অধিক । যখন বিভিন্ন জাতীয়দিগের মধ্যে এত অস্তরতা না থাকিবে তখন জাতিভেদ ও থাকিবে না। তবে বুদ্ধ নানকাদি মহাত্মাগণ ঐ জাতিভেদ উঠাইতে গিয়াছিলেন কেন ? তাহার উত্তর এই—ধৰ্ম্মজ্ঞেরাও দূরদর্শী, নীতিজ্ঞেরাও দূরদর্শী, কিন্তু ধৰ্ম্মজ্ঞদিগের দূরদর্শন ভাবাত্মকতামূলক, নীতিজ্ঞদিগের যুক্তিমূলক-ভাবাত্মকতা কালাকাল বিচার করে না। এই সকল কথা শুনিয়া যদি কোন অৰ্ব্বাচীন বিচারসথ বলেন যে জাতিভেদ উঠাইয়া দিয়া বিভিন্ন জাতীয়ের মধ্যে কম্ভাৱ আদান প্রদান করিলেত আকারগতভেদ সত্বরেই মিটিয়া আইসে, র্তাহার কপার অনেক উত্তর আছে—কিন্তু এইমাত্র বলিলেই পর্য্যাপ্ত হইবে যে ওরূপ কাণ্ড নর নারীদিগের এবং জন্তু মাত্রেরই অস্বাভাবিক । জাতিভেদ সম্বন্ধে আর কয়েকটা কথা বলা আবশু্যক । ইহার অভ্যন্তর ভাগে কয়েকটী বিশেষ লক্ষণ এবং গুণ আছে । ( ১ ) বিজিত জাতীয় লোকের মধ্যে সহজেই আত্মগৌরব নষ্ট হইয়া যায় । ( ২ ) সকল বর্ণের লোকেই একমাত্র ব্রাহ্মণ ভিন্ন আর কাহার অপেক্ষা আপনাদিগকে নিকৃষ্ট বলিয়া মনে করে না । (৩) জাতিভেদ থাকায় ধনের গৌরব নিতান্ত বৃদ্ধি হইতে পার না । సె
পাতা:বিবিধ প্রবন্ধ (ভূদেব মুখোপাধ্যায়) দ্বিতীয় ভাগ.djvu/৭৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।