\obo বিবিধ প্রবন্ধ । বটে, বেশীও বটে, অর্থাৎ এখানে উচ্চজাতীয় এবং অস্ত্যজ এতদুভয়ের মধ্যবর্তী এমন কতকগুলি জাতি জন্মিয়া আছে, যাহাদের সহিত ব্ৰাহ্মণাদির বৈসাদৃশু অনধিক অর্থাৎ আর্য্যাবর্তের দ্যায় ; কিন্তু নিতান্ত অন্ত্যজদিগের সহিত বৈসাদৃশু অধিক অর্থাৎ দাক্ষিণাত্যের দ্যায়। এই সকল কারণে এবং আমি নিজে এই সমাজের লোক এবং যদি কেহ আমার লেখা পড়েন তবে এই সমাজের লোকেই পড়িবেন, ইহা মনে করিয়া বাঙ্গালী সমাজ সম্বন্ধে যাহা বলা আবগুক বোধ হয়, তাহাই বলিব । বাঙ্গালী জাতি অপরাপর আর্য্যাবৰ্ত্তবাসীর দ্যায় আর্য্যপ্রধান । সেই প্রধানতম উপাদানের সহিত অনেকটা কোলেরীয় কতকটা দ্রাবিড়ী এবং কিছু পরিমাণ তাতারীয় মিশ্রিত হইয়া আছে। বাঙ্গালার মুসলমানেরা কোন নুতন উপাদান নহে । কোলেরীয়রা কোন অতি পূৰ্ব্বকালে প্রাগজ্যোতিষ বা আসাম প্রদেশ ভেদ করিয়া দক্ষিণ পশ্চিমাভিমুখে ছোটনাগপুর পর্য্যস্ত বিস্তৃত হইয়াছিল । দ্রাবিড়ীয়রা দক্ষিণ পূৰ্ব্বদিক হইতে, কাহার কাহার মতে সমুদ্র পথে বঙ্গোপসাগর দিয়া, উড়িষ্যার দক্ষিণ সীমা হইতে উত্তর-পশ্চিমাভিমুখে উঠিয়াছিল । তাতারীয়রা ব্ৰহ্মদেশ হইতে কতক আসামের ভিতর দিয়া কতক মণিপুর প্রদেশের পাহাড় উপচিয়া প্রবেশ করিয়াছিল। আর্য্যের উত্তর পশ্চিমাঞ্চল হইতে গঙ্গা প্রবাহের অনুক্রমে আসিয়া উল্লিখিত তিনটী বিভিন্ন স্তরের উপর বিস্তৃত হইয়াছিলেন । এই বহু পূৰ্ব্বগত ব্যাপার এখনও সম্পূর্ণ রূপে বিরত হয় নাই । কোলেরীয়দিগের আর কোন চিকু বাঙ্গালার উত্তর-পূৰ্ব্ব কি মধ্য ভাগে দৃষ্ট হয় না, এবং পশ্চিম ভাগেও অতি অস্পষ্টরূপে দৃষ্ট হয় বটে, কিন্তু দ্রাবিড়ীয় সাওতালেরা এখনও হাজারিবাগ, সাওতাল পরগণ, রাজমহল প্রদেশ দিয়া উত্তর পূর্বাভিমুখে চলিতেছে দেখা যায়, আর আসামের ভিতরে এবং খসিয়া পৰ্ব্বতাদিতে পূৰ্ব্বদিক হইতে নূতন নুতন পাৰ্ব্বতীয় লোকের সঞ্চার এখনও হইয়া থাকে। উত্তর পশ্চিমাঞ্চল হইতে আর্য্য সঞ্চারেরও এখন সম্যক্ নিবৃত্তি হয় নাই । ভাগলপুর, সাওতাল পরগণা, বীরভূম প্রভৃতি পশ্চিমদিগৃবৰ্ত্তী জেলাগুলিতে এখনও বিহার এবং উত্তর পশ্চিমাঞ্চল হইতে নূতন লোক আসিতেছে এবং বাস করিতেছে। পনর ষোল বৎসর পূৰ্ব্বে ঐ সকল জেলার কোন মেলা স্থানে গিয়া খাস তদেশীয় লোক যত দেখিতে পাওয়া যাইত এখন আর তত পাওয়া যায় ন—এখন হিন্দুস্থানী আকারের লোক বাড়িয়াছে । এখন সাওতাল নাচে আর খাস-সাওতাল
পাতা:বিবিধ প্রবন্ধ (ভূদেব মুখোপাধ্যায়) দ্বিতীয় ভাগ.djvu/৭৬
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।