8 বিবিধ প্রবন্ধ । ছিল—এই কথা স্পষ্টীক্ষরে লিখিত হইয়াছে। আর একটা অপুৰ্ব্ব ভাবে ঐ ংস্কার কার্য্যটী নিৰ্ব্বাহিত হইয়াছিল দেখা যায় । ইহাতে কোন ধৰ্ম্মমত পরিবর্তনের উল্লেখ মাত্র নাই । ভারতবর্ষে ধৰ্ম্মমভ পরিবর্তনের কোন কথা না উঠাই উচিত । ধৰ্ম্মসম্বন্ধে এখান হইতে বেশী কথা বা উচ্চকথা আর কোথাও হয় নাই—হইতে পারিবেও না । রাজা রামমোহন রায় মহম্মদীয় মতবাদ, খৃষ্টীয় মতবাদ এবং বৌদ্ধ মতবাদ সকল গুলিই অতি উত্তমরূপে শিখিয়াছিলেন । তিনি সকল দেখিয়া শুনিয়া বৈদিক উপনিষদেই ধৰ্ম্মের সার তত্ত্ব আছে জানিয়াছিলেন। তাহাকে কিছু কোরণ, কিছু বাইবেল, কিছু ধৰ্ম্মপদ হইতে লইয়া পাচ ফুলে ধৰ্ম্মসাজি পুরাইতে হয় নাই। আপেক্ষিকত্ব পরিহার দর্শনশাস্ত্রের প্রণেতা সোপেনহারও বলিয়া গিয়াছেন—“বৈদিক উপনিষদ শাস্ত্র পৃথিবীর সকল ধৰ্ম্ম শাস্ত্রের শীর্ষস্থানীয়, ঐগুলি আমার জীবনের স্বথ এবং মৃত্যুকালের একমাত্র সম্বল ।” জাতীয় ইতিবৃত্ত । নব্য ইউরোপীয়গণ র্তাহীদের ইতিহাস গ্রন্থগুলিতে তাতারীয়দিগের দ্যায়, সন তারিখ দেন, ইহঁার ভারতবর্ষীয়দিগের স্তায় কাৰ্য্যকারণস্বত্র ঘটাইবার জন্ত চেষ্টা করেন, ইহঁারা গ্ৰীক এবং রোমীয়দিগের দ্যায়, স্বজাতি পক্ষপাত এবং স্বদেশ গৌরব খ্যাপন করেন, আর য়িহুদীদিগের স্তায় ঐতিহাসিক ৰ্যাপারে বিশ্বপাত ঈশ্বরের হস্তক্ষেপ দেখিতে পান । ঐতিহাসিক ব্যাপারে কারণ পরম্পরা কিরূপ কাৰ্য্যকারী তাহা বুঝিবার জুইট পরস্পর পৃথকৃ ভাৰ আছে। এক ভাৰ এই যে, ষাৰতীয় ঘটনা পরম্পরায় সমালোচন করিয়া যখন ঐগুলির চরম ফল কি হইবে তাহা কতকদুর স্পষ্টরূপে বুঝিতে পারা যায়, তখন এরূপ মনে করা যাইতে পারে যে, ঐ চরম ফল উৎপন্ন করিবার উদ্দেশ্রেই ঐ ঘটনা সকল সংঘটিত হইয়াছে। ইহার নাম সেশ্বর ভাব । আবার যদি ঐ ঘটনা পরম্পরার চরমফল বুঝিম্না তৎপ্রতি কোন উদ্দেশ্যবিশেষের আরোপ না করা যায়, অর্থাৎ ঘটনা সকল ঐ ঐ রূপ হওয়াতে এইরূপ চরম ফল হইবে এই মাত্র বুঝিয়া নিবৃত্ত হওয়া যায়, তাহার নাম নিরীশ্বর ভাব । অতএব ঐতিহাসিক ঘটনাগুলির ফলাফল বিচার সম্বন্ধে সেশ্বর ভাবের পথ যাহা, নিরীশ্বর ভাবের পথ ও তাছাই । সে পক্ষে ঐ দুইট ভবের কিছুমাত্র ইতর বিশেষ নাই ।
পাতা:বিবিধ প্রবন্ধ (ভূদেব মুখোপাধ্যায়) দ্বিতীয় ভাগ.djvu/৮২
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।