দ্বিতীয় ভাগ । 4领 কোন কোন ইংরাজ বিদ্রপ করিয়া বলেন যে, ভারতবাসীরা তাসের কাগজের দ্যায় বিভিন্ন রূপ এবং বিভিন্ন বর্ণ। বাস্তবিক কোন এক দেশীয় এবং এক জাতীয় লোকের মধ্যে এত বর্ণ এবং এত রূপবৈচিত্র্য নাই। ফলতঃ সেই কারণেই এখানে অসবর্ণে বিবাহ প্রতিষিদ্ধ এবং তাঁহারই সহিত একত্রে ভোজন ও প্রতিষিদ্ধ । ভারতবর্ষের মধ্যে যে যে প্রদেশে রূপবৈচিত্র্য কম সেই সেই প্রদেশে খাওয়ার আঁটাঅাটিও কম । পঞ্জাবে কাহার বা ঝিমর বা জাঠ বা অপর জাতীয় লোকদিগের দাউল, ক্লটি প্রভৃতি পক্ক ভোজ্য সামগ্রীর খোলা দোকান আছে—ব্রাহ্মণেতর সকল জাতিই ঐ সকল দ্রব্য ক্রয় করিয়া খায় । সমুদয় উত্তর পশ্চিমাঞ্চলে এবং অযোধ্য প্রদেশে পকমাংস এবং ব্যঞ্জনাদি কাহার কুৰ্ম্মি প্রভৃতি জাতীয়ের মাথায় করিয়া বহে এবং ক্ষত্রিয়, রাজপুত, লালf প্রভৃতির তাহা গ্রহণ করে। উহাতে কিছু মাত্র স্পর্শদোষ হইয়াছে মনে করে না। বিহার অঞ্চলে এবং মধ্য প্রদেশেরও অনেকানেক স্থানে ভৃত্যের মাংস ও ব্যঞ্জনাদি রান্ধিয়া দিলে—ব্রাহ্মণ ভিন্ন সকলেই খায়। পঞ্চাৰে জনগণের মধ্যে রূপভেদ অপেক্ষাকৃত অল্প, সেখানে সকল খাওয়াই একত্রে চলে। উত্তর পশ্চিম, অযোধ্যা, এবং মধ্য প্রদেশাদিতে রূপভেদ তাহ অপেক্ষ কিছু অধিক, সেখানে ভাত, দাউল, রুটি-এই তিনের “আম্বেব” আছে আর কিছুরই নাই। বাঙ্গালায় এবং উড়িষ্যায় রূপভেদ আরও অধিক ; ঐ সকল প্রদেশে আচমনীয় মাত্রেই নিষিদ্ধ ; তবে লুচি, কচুরি, মগু, মিঠাইরের চলন আছে । ও সকলে বড় একটা স্পর্শ দোষ ধরা হয় না। কিন্তু, দাক্ষিণাতে্যু রূপভেদ সৰ্ব্বাপেক্ষায় অধিক এবং ওখানে উচ্চ শ্রেণীর লোকে নিকৃষ্ট জাতীয়দিগের হস্ত হইতে ফল জল লওয়াতেও অনেকটা দোষানুভব করে। ব্রাহ্মণের: ব্রাহ্মণ ভিন্ন অপর কোন জাতীয়ের স্পৃষ্ট জলও গ্রহণ করেন না। খাওয়ার আঁটাতাটিও যে প্রদেশে যত কম বিবাহের বৈবাহিক সশ্বন্ধে জাতি বিচারের আঁটাতাটিও তথায় সেই পরিমাণে কম। (১) আমার একট পঞ্জাবী আত্মীয় তাহার পত্নী সমভিব্যাহারে আমার বাটীতে দিন কয়েকের জন্ত আতিথ্য গ্রহণ করিয়াছিলেন। তাহার পত্নী ক্ষত্ৰিয়কন্ত', তিনি স্বয়ং জাঠ । সমাজে তাহার তত দোষ ধরে না । (২) কোন সময়ে কনোজ নগরে একটা ব্রাহ্মণ পণ্ডিতের আবাসে ছিলাম । তিনি বিশেষ অনুগ্রহ করিতেন এবং আমার প্রতি ভ্ৰাতৃ সম্বোধন করিতেন। একদিন উভয়ে একত্রে বসিয়া
পাতা:বিবিধ প্রবন্ধ (ভূদেব মুখোপাধ্যায়) দ্বিতীয় ভাগ.djvu/৮৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।