ు G Nు বিবিধ প্রবন্ধ । আসিয়া, রাজার মুখ দেখিয়াই বলেন, আর নবমালিকা দেখিবার প্রয়োজন নাই, তোমার হাসি হাসি মুখ দেখিয়াই বুঝিয়াছি, আমার হারি হইয়াছে । রাজা অন্ত স্ত্রীতে আসক্ত হইতেছেন বুঝিয়া, যেমন ক্রোধের উদ্রেকে ভ্রভঙ্গ উপস্থিত হয়, অমনি আত্মদমন করিয়া মুখমণ্ডলকে বিনয়নম্র করেন, যেমন অন্তৰ্ব্বাস্প উখিত হইয়া নেত্রদ্ধয়কে সজল করিয়া আনে, অমনি আত্মসংযম বলে চখের জল চখেই শুষ্ক করেন ; কটু কথা বলেন না—কেবল মাত্র ‘ভেদকারী ঈষৎ হাস্য করিয়া চলিয়া যান। এ কি অত্যন্থত স্ত্রী-চিত্র। এরূপ আত্মদমনশীল, উপেক্ষাকারিণী, অনুগ্রহপরায়ণ, পরিজন বৎসল, যাহার চরণ স্মরণ করিয়া পরিজনবর্গ শপথ গ্রহণ করে, মানুষী-দেবী কি কাব্য নাটুকাদিতে আর দেখিতে পাওয়া যায় ? সকল কাব্য নাটকেই দেখা যায়, উৎকৃষ্ট নায়িকামাত্রেই কোমল, সরল, দুৰ্ব্বলী, মুগ্ধারূপে বর্ণিত হইয়া থাকেন। এত আত্মদমন, এত উপেক্ষ, এত গাম্ভীৰ্য্য আর কোন নায়িকায় দেখা যায় না । এই বস্তুটি, কি রত্নাবলীকারের মনঃ কল্পিত, না রত্নাবলীকার তাহার বাসবদত্ত সংগঠনের উপাদান গ্রন্থান্তর হইতে পাইয়াছিলেন ? এই প্রশ্নের উত্তর করিতে গেলে আরও অনেক কথা বাহির হয়— এবং. তাহাতে সমগ্ৰ নাটিকাটীরই প্রকৃতি কিছু নুতন ভাব ধারণ করে। রত্নাবলীর আখ্যায়িকা অপর একটা মূলগ্রন্থ হইতে সঙ্কলিত। সে মূলগ্রন্থ ‘বৃহৎ কথা’ বা তাহারই সংক্ষিপ্তসার কথা সরিৎসাগর’ । যেমন রামায়ণ এবং মহাভারত, মহাবীর উত্তরচরিতাদি এবং শকুন্তলা বিক্রমোর্কশী প্রভৃতি নাটকের উপজীব্য, বৃহৎ কথাও সেইরূপ অনেক কাব্য নাটকাদির অবলম্ব। 'মুদ্রারাক্ষস' নাগানন্দ এবং ‘রত্নাবলীর উপাখ্যান ভাগ বৃহৎ কথা হইতেই অল্প বা অধিক পরিমাণে সংগৃহীত হইয়াছে। ‘নাগানন্দে’র ত আদ্যন্ত সমুদায়ই ‘কথা সরিৎসাগর’ হইতে লওয়া । যদিও রত্নাবলীর সমুদায় কথা সেরূপ আনুপূৰ্ব্বক্রমে ঐ
পাতা:বিবিধ প্রবন্ধ (ভূদেব মুখোপাধ্যায়) প্রথম ভাগ.djvu/১১৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।