বিবিধ প্রবন্ধ । 8 S এক্ষণে দেখিতে হইবে, রামসীতার পুনর্মিলনের পক্ষে রূপকময় তৃতীয়াঙ্কের উপযোগিতা কতদূর। “ ঐ উপযোগিতার বিচারে প্রবৃত্ত স্ট্র আমরা প্রথমতঃ একটি বৈদেশিক নাটকের উপাখ্যানাংশ গ্রহণ করিলাম। ঐ নাটকে বর্ণিত আছে,— এক রাজা তাহার ধৰ্ম্মশীলা পতিপরায়ণা পত্নীর প্রতি সন্দিগ্ধচিত্ত হইয় র্তাহাকে পরিত্যাগ করেন। ষোড়শ বৎসর পরে তাহার সেই সন্দেহ যায়, এবং তখন তিনি অন্ধুতাপে মুগ্ধ হইয়া পড়েন। অনন্তর রাজ্ঞীর একটি পাষাণময়ী মূৰ্ত্তি রক্ষিত হইয়াছে, শুনিয়া ব্যগ্র হইয়া সেই প্রতিমূৰ্ত্তি দেখিতে যান, এবং তৎসমীপে অনেক করুণবিলাপ করেন। বস্তুতঃ ঐ মূৰ্ত্তিই জীবিত রাজপত্নী স্বয়ং। তিনি স্বামীর করুণবিলাপে বিগতদুঃখ হইয়া পুনৰ্ব্বার স্বামীসহ মিলিত হইয়াছিলেন। ফলতঃ পতিকৃত গুরুতর অবমাননায় অবমানিত পত্নীর মৰ্ম্মান্তিক দুঃখ ঐরূপে বই যে আর কিছুতেই যাইবার নহে, ইহা সাধারণ প্রতীতি। অবমানিত শোকবিহবল স্ত্রী স্বামীকে বলিলেন,--“আমি মরি, এবং মরিয়া দেখিতে পাই, তুমি আমার জন্ত কঁাদিতেছ, তাহা হইলেই দুঃখ যায় ।” যে কবি স্ত্রীলোকদিগের মনের এই ভাবটি ভাল করিয়া বুঝেন, তিনি বৈদেশিকই হউন, আর দেশীয়ই হউন, তাহাকে পরিত্যক্ত স্ত্রীর স্বামীর সহিত পুনর্মিলন সাধন করিতে হইলে স্ত্রীকে গতপ্রাণার দ্যায় প্রতীয়মান করাইয়। স্বামীর ‘কান্না’ শুনাইতে হয়। স্বামীর অবিচলিত প্রগাঢ় প্রেমের, তদীয় দুস্কৃতিনিবন্ধন প্রকৃত অনুতাপের এবং লোক-লজ্জ-নিবারক তাদৃশ কোন প্রকাশ্য ব্যবহারের নিদর্শন ব্যতিরেকে পরিত্যক্ত স্ত্রী, ঈষন্মাত্র আত্মগৌরব সত্ত্বে, পরিত্যাগকারী স্বামীকে পুনগ্রহণে সম্মত হইতে পারেন না। সাধবীদিগের হৃদয়ে আত্মগৌরব অতি প্রবল ভাবেই বিরাজ করে। র্তাহার। যতই কোমল, শীতলা, আত্মবিসর্জনে প্রবণ ও আত্মবিলোপে সক্ষম হউন, তাহাদিগের সাধীতাটিই জলন্ত হুতাশন স্বরূপ। জগতীতলে সাধবীপ্রতিম সীতাও সুতরাং এরূপ একটি অগ্নিশিখা। ভূতধাত্রী পৃথিবী এবং ত্রিলোক "&g
পাতা:বিবিধ প্রবন্ধ (ভূদেব মুখোপাধ্যায়) প্রথম ভাগ.djvu/৪৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।