রত্নাবলী । b-a হে দেবি । চন্দ্রের শোভাতিরস্কারী তোমার মুখপঙ্কজ কর্তৃক বিজিত হইয়া পঙ্কজ সকল সহসা মানত প্রাপ্ত হইতেছে দেখ, এবং তোমার পরি বারস্থ বারবণিতাদিগের গীৰু শ্রবণ করিয়া ভৃঙ্গাঙ্গনীগণ লজ্জিত হইয়াই যেন আস্তে আস্তে মুকুলান্তরে লীন হইতেছে। . এই পৰ্য্যন্ত লিথিয়াছি, এমন সময়ে এক জন ভাবুক ব্যক্তি আমাীিগের নিকটে অসিলেন এবং কি লিখিতেছি শুনিতে চাছিলেন। র্তাহাকে সমুদায় পাঠ করিয়া শুনাইলাম। তিনি বলিলেন, “ঐ শ্লোকগুলির অনুবাদ মাত্র লিখিয়া দিলেই আপনার মনের কথা সমুদায় খুলিবে না। শ্লোক গুলিতে যে কেবল রসিকতা এবং পাণ্ডিত আছে –তেমন প্রেমামু-- রাগের চিন্তু নাই—ইহা স্পষ্ট করিয়া দেখাইয়া দিতে হইবে। বলিতে হইবে যে, প্রথম শ্লোক যদি প্রেমবিহবল ভাবুকের মুখনিঃস্থত হইত, তবে ঐ কুসুম-সুকুমারী, ব্ৰতশীল, ক্ষীণ-মধ্যা, অনঙ্গদেবের চাপ-যষ্টি রূপ, অগ্রবর্তিনী নারীমূৰ্ত্তি যে আপনার নিজের জিনিস ভাহা কোনরূপে না কোনরূপে অবশ্যই ব্যক্ত হইত। কিন্তু ঐ শ্লোকে সে ভাবের লেশমাত্র নাই। “মকরকেতোঃ পাশ্বস্থা”—ছি ! ছি ! ওকি প্রকৃত প্রেমিকের কথা ? ‘আভাতি’—কোথায় ? প্রেমিক বলিবে, তাহার নিজের হৃদয়ে-উদয়ন বলিল মকরকেতুর পাশ্বে ! “দ্বিতীয় শ্লোকেও ঐ কাণ্ড—কেবল রূপের বর্ণন মাত্ৰ—নিজে যে সেই রূপরাশির অধিকারী তাহার কোন চিহ্ল নাই—যদি প্রকৃত গাঢ়তম প্রেম বর্ণনার ইচ্ছা থাকিত, তবে কবি উদয়নের চক্ষুকে অত গাত্রমার্জন এবং অঞ্চলের শোভা দেখিতে দিতেন না—ঐ প্রবাললতিকা যে অশোক বৃক্ষকে জড়ায় না, আর কাহাকেও অবলম্বন করিয়া খাকে, এ ভাবও প্রকাশ করিতেন । “তৃতীয়ু শ্লোকেও প্রায় ঐক্লপ—কিন্তু কিছু ভিন্ন। রূপরাশি দেখিতে দেখিতে একটু সাত্বিক ভাবের যেন আবির্ভাব হইয়া আসিতেছে।
পাতা:বিবিধ প্রবন্ধ (ভূদেব মুখোপাধ্যায়) প্রথম ভাগ.djvu/৯৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।