পাতা:বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্রেষ্ঠ গল্প.pdf/১০৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিপদ SOct. তন্তপোষের ওপর সাজানো গোছানো ফস চাদর পাতা বিছানা । দেওয়ালে বিলিতি সিগারেটের বিজ্ঞাপনের ছবি দ-তিনখানা। মেম সাহেব আমােক সিগারেট টানিতেছে। একখানা ছোট জলচৌকির ওপর খানকতক পিতলকাসার বাসন রেড়ির তেলের প্রদীপের অলপ আলোয় ঝক ঝকা করিতেছে। মেঝেতে একটা পরানো মাদর পাতা। বোল্টমের মেয়ে, একখানা কোিটঠাকুরেব ছবিও দেওয়ালে টাঙানো দেখিলাম। ঘরের এক কোণে ডুগি-তবলা এক জোড়া, একটা হাঁকো, টিকে-তামাকের মালসা, আরও কি কি । হাজ গজেেবর সহিত বলিল-এই দেখােন আমার ঘর--ব্যাঃ, বেশ ঘর তো । কত ভাড়া দিতে হয় ? -সাড়ে সাত টাকা । ーび卒*「目 হাজ একঘাটী জল লইয়া আসিয়া বলিল-পা ধয়ে নিন-কেন ? পা ধোয়ার এখন কোনো দরকার দেখচিনে । আমি এখনি চলে यIgदT ! -একট, জল খেয়ে যেতে হবে। কিন্তু এখানে জ্যাঠামশায় । এখানে জলযোগ করিবার প্রবত্তি হয়। কখনো ? পতিতার ঘরদোর। গা ঘিনা, ঘিন করিয়া উঠিল। বলিলাম-না, এখন কিছ খাবো না । সময় নেইহাজ সে কথা গায়ে না মাখিয়া বলিল-তা হবে না । সে আমি শানচিনে --কিছতেই শানবো না-বসন তাহার পর সে উঠিয়া জলচৌকি হইতে একটা চায়ের পেয়ালা তুলিয়া আনিয়া সযত্নে সেটা অচিল দিয়া মছিয়া আমাকে দেখাইয়া বলিল-দেখান, কিনিচি-আপনাকে চা করে খাওয়াবো। এতে-চা করতে শিখিাঁচ । ড্রেসডেন চায়না নয়, অন্য কিছু নয়, সামান্য একটা পেয়ালা । হাজার মনসস্তুটির জন্য বলিলাম- বেশ জিনিস, বাঃ ও উৎসাহ পাইয়া আমাকে ঘরের এ-জিনিস ও-জিনিস দেখাইতে আরম্ভ করিল। একখানা আয়না, একটা টকনি ঘটী, একটা সদশ্য কোঁটা-ইত্যাদি । এটা কেমন ? ওটা কেমন ? সে এসব কিনিয়াছে। তাহার খাঁশি ও আনন্দ দেখিয়া অতি তুচ্ছ জিনিসেরও প্রশংসা না করিয়া পারিলাম না। এতক্ষণ ভাবিতেছিলাম, ইহাকে এ পথে আসিবার জন্য তিরস্কার করি এবং কিছ সদ্যপদেশ দিয়া জ্যাঠামশায়ের কতব্য সমাপ্ত করি। কিন্তু হাজার খাঁশি দেখিয়া ওসব মাখে আসিল না । যে কখনো ভোগ করে নাই, তাহাকে ত্যাগ করো যে বলি সে পরম হিতৈষী সাধ হইতে পারে, কিন্তু সে জ্ঞানী নয়। কাল ও ছিল ভিখারিণী, আজ এ পথে আসিয়া ওর অন্নবস্ত্রের সমস্যা ঘনচিয়াচে ? কাল যে পরের বাড়ী চাহিতে গিয়া প্রহরী খাইয়াছিল, আজ সে নিজের ঘরে বসিয়া গ্রামের লোককে চা খাওয়াইতেছে, নিজের পয়সায় কেনা পেয়ালা পিরিচে-যার বাবাও কোনোদিন শহরে বাস করে নাই বা পেয়ালায় চা পান করে নাই । ওর জীবনের এই পরম