পাতা:বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্রেষ্ঠ গল্প.pdf/১২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SRR বিভতিভষণের শ্রেষ্ঠ গল্প মখের ভাবে ধৰ্ত্তেতা ও বদ্ধিমত্তা মেশানো, নীচের চোয়ালের গড়ন দঢ়তাব্যঞ্জক। চোখ দটি বড় বড়, উক্তজবল ; জ্যোতিষীর মািখ দেখিয়া আমার লড় রেডিঙের চেহারা মনে পড়িল—উভয় মািখাবয়বের আশ্চৰ্য্য সেীসাব্দশ্য আছে। কেবল লর্ড রেডিঙের মাখে আত্মপ্রত্যয়ের ভাব আরও অনেক বেশি। আর ইহার চোখের কোণের কুণ্ডিত রেখাবলীর মধ্যে একটা ভরসা-হারানোর ভাব পরিস্ফাট । অথাৎ যতটা ভরসা লইয়া জীবনে নামিয়াছিলেন, এখন তাহার যেন অনেকখানি হারাইয়া গিয়াছে, এই ধরনের একটা ভাব । প্রথমে আমিই হাত দেখাইলাম । বদ্ধ নিবিলটি মনে খানিকটা দেখিয়া আমার মাখের দিকে চাহিয়া বলিল— আপনার জন্মদিন পনরই শ্রাবণ, তেরশ, পাঁচ সাল । ঠিক ? আপনার বিবাহ হয়েছে তেরশ সাতাশ সােল, ঐ পনরই শ্রাবণ, ঠিক ? কিন্তু জন্মমাসে বিয়ে তো হয় না ; আপনার হলো কেমন ক’রে, এ রকম তো দেখিনি । কথাটা খাব ঠিক । বিশেষ করিয়া আমার দিন মনে ছিল। এইজন্য যে, আমার জন্মদিন ও বিবাহের দিন একই হওয়াতে বিবাহের সময় ইহা লইয়া বেশ একটি গোলমাল হইয়াছিল । তারানাথ জ্যোতিষী নিশ্চয়ই তাহা জানে না । সে আমাকে কখনও দেখে নাই, আমার বন্ধ কিশোরী সেনও জানে না।--তার সঙ্গে আলাপ মোটে দ’বছরের, তাও এক ব্রিজ খেলার আড্ডায়, সেখানে ঘনিষ্ঠ সাংসারিক কথাবাত্তর কোন অবকাশ নাই । তারপর বন্ধ বলিল-আপনার দই ছেলে, এক মেয়ে । আপনার স্ত্রীর শরীর বক্তমানে বড় খারাপ যাচ্ছে । ছেলেবেলায় আপনি একবার গাছ থেকে পড়ে গিয়েছিলেন। কিংবা জলে ডুবে গিয়েছিলেন-মোটের উপর আপনার মস্ত বড় ফাঁড়া গিয়েছিল, তের বছর বয়সে । কথা সবই ঠিক । লোকটার কিছ, ক্ষমতা আছে দেখিতেছি । হঠাৎ তাবানাথ বলিল-বত্তমানে আপনার বড় মানসিক কম্পট যাচ্ছে, কিছ: অৰ্থ নন্ট হয়েছে। সে টাকা আর পাবেন না, বরং আর কিছর ক্ষতিযোগ আছে। আমি আশ্চয্য হইয়া উহার মাখের দিকে চাহিলাম। মাত্র দ’দিন আগে কলটোলা সন্ত্রীটের মোড়ে ট্রাম হইতে নামিবার সময় পাঁচখানা নোটসদ্ধ মনিব্যাগটি খোয়া গিয়েছে। লতাজায় পড়িয়া কথাটা কাহাকেও প্রকাশ করি নাই । তারানাথ বোধ হয় থট-রীডিং জানে। কিন্তু আরো ক্ষতি হইবে তাহা কেমন করিয়া বলিতেছে ? এটাকু বোধ হয় ধাপা । যাই হোক, সাধারণ হাত-দেখা গণকের মত মন বঝিয়া শােধ মিলিট মিলিট কথাই বলে না। আমার সম্বন্ধে আরও অনেক কথা সেদিন সে বলিয়াছিল । লোকটার উপর শ্রদ্ধা হইল। মাঝে মাঝে তার সেখানে যাইতাম, হাত দেখাইতে যে যাইতাম তাহা নয়, প্রায়ই যাইতাম আন্ডা দিতে। লোকটার বড় অদ্ভুত ইতিহাস । অলপ বয়স হইতে সাধা-সন্ন্যাসীর সঙ্গে বেড়াইতে বেড়াইতে সে এক তান্ত্রিক গােরর সাক্ষাৎ পায় । তান্ত্রিক খািব ক্ষমতাশালী ছিলেন । তাঁর কাছে কিছুদিন তন্ত্রসাধনা করিবার ফলে তারানাথও কিছু ক্ষমতা পাইয়াছিল । তাহা লইয়া কলিকাতায় আসিয়া